আবহাওয়া বিভাগের সতর্কতা সংকেতের কারণে সাগর থেকে মাছ না ধরেই ফিরছে জেলেরা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় আজ শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সাগরে ট্রলার চলাচলের ওপর ৩নং স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ।
দুর্যোগের আশংকায় আবহাওয়া বিভাগের জারি করা এ সতর্কতা সংকেতের খবর পেয়ে জেলেরা সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরতে শুরু করে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের অধিকাংশ ট্রলারই ঘাটে ফিরেছে বলে জানিয়েছে ট্রলার মালিক সমিতি।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় ৮ হাজার মাছধরার বোট রয়েছে। এতে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ১ লাখ জেলে। অনুকূল আবহাওয়ায় জেলেরা সাগরে পুরোদমে মাছ ধরছিল। এমনই সময় আজ শুক্রবার আবহাওয়া বিভাগ সাগরে ট্রলার চলাচলের ওপর ৩নং স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করে।
এ খবর পেয়ে জেলেরা সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরতে শুরু করে। শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত কক্সবাজারের অধিকাংশ ট্রলারই ঘাটে ফিরেছে। বাকি ট্রলারগুলোও রাতের মধ্যে বা শনিবার দুপুরের মধ্যে ঘাটে ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ট্রলার মালিকরা জানান, এর আগে গত ১৮ আগস্ট একই কারণে সাগরে সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। এ সময় সাগর থেকে ফেরার পথে অন্তত দু’টি বোটডুবির ঘটনা ঘটে এবং এতে ৮ জন জেলে মারা যায়।
প্রায় এক সপ্তাহ পর আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে সাগরে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হয়।
এ নিয়ে গত এক মাসে সাগরে তৃতীয়বারের মতো লঘুচাপ তৈরি হলো। লঘুচাপের কারণে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত একইভাবে সাগরে মাছধরা বন্ধ ছিল।
আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করায় গত ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে ট্রলারগুলো ফের মাছ ধরতে সাগরে গিয়েছিল কিন্তু মাত্র দুইদিন পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে আবহাওয়া দপ্তর ফের ৩নং সতর্কতা সংকেত জারি করলে মাছ না ধরেই ঘাটে ফিরে ট্রলারগুলো।
বঙ্গোপসাগরে বারবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ার কারণে গত এক মাসের অধিকাংশ সময়ই সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল এবং এ কারণে সাগর থেকে মাছ ধরাও কম পড়েছে বলে জানান শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।
ট্রলার মালিকরা জানান, কক্সবাজারে একেকটি বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৯ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে। ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। এসব জেলে বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।












