কক্সবাজারের উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া পালং এলাকার ব্যবসায়ী আবুল হাছান হত্যা মামলার বিচারের রায় হত্যাকাণ্ডের ৩০ বছর ৬ মাস পর আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আদালতে ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে ২ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নিশাত সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামীদ্বয় হলো কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া পালং গ্রামের গুরা মিয়ার ছেলে জয়নাল আবেদীন এবং একই এলাকার এজাহার মিয়ার ছেলে সিরাজুল হক।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত আসামী জয়নাল আবেদীন আদালতে উপস্থিত থাকলেও অপর আসামী পলাতক ছিল বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী।
তিনি জানান, মামলায় ৬ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। বাকি ৩ আসামী ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করায় মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালের ১৯ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে ভালুকিয়া পালং এলাকায় ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় আবুল হাছানের ওপর কতিপয় দুষ্কৃতকারী দা, লাঠিসহ দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আবুল হাছান গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মিনু আরা বেগম বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিলের পর ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও আলামত পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বৃহস্পতিবার মামলাটি রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে আসামী জয়নাল আবেদীন ও সিরাজুল হককে ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামী আবদুস সালাম, রনজিত বড়ুয়া, মোক্তার আহমদ, দুলা মিয়া, জসিম উদ্দিন ও জিনু কান্তি বড়ুয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
এছাড়া মামলার ৩ জন আসামী যথাক্রমে কালা মিয়া, ফজলুল হক মিয়া ও নুরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করায় মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।