কক্সবাজার সৈকতে ফের ভেসে এলো শত শত মরা জেলিফিশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১১ নভেম্বর, ২০২২ at ৪:২৯ অপরাহ্ণ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ফের ভেসে এলো শত শত মরা জেলিফিশ। আজ শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা ধরে শহরের কলাতলী বেইলী হ্যাচারী পয়েন্ট থেকে সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে সামুদ্রিক জোয়ারের সাথে এই জেলিফিশ ভেসে আসার দৃশ্য চোখে পড়ে। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের একদল বিজ্ঞানী ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত জেলিফিশ পরীক্ষা করেন।

তারা জানান, কক্সবাজার সৈকতে যে প্রজাতির জেলিফিশটি ভেসে এসেছে এটি ক্ষতিকর প্রজাতির নয় বরং খাওয়ার উপযোগী। এর আগে গত ৩ আগস্টও একই সৈকতে একই প্রজাতির শতাধিক জেলেফিশ ভেসে এসেছিল। তবে গতবারের তুলনায় এবারের জেলিফিশ ভেসে আসার ঘটনা অনেক ব্যাপক বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, “আমরা শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে কলাতলী সৈকতে জেলিফিশ ভেসে আসার খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যাই এবং সেখানে হাজারখানেক মৃত জেলিফিশ দেখতে পাই। এরপর মৃত জেলিফিশগুলো পরীক্ষা করে দেখি এগুলো ক্ষতিকর প্রজাতির নয় বরং বিশ্বের যে ১১ প্রজাতির জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী তার মধ্যে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা জেলিফিশটিও অন্যতম।”

তিনি জানান, শুক্রবার কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসা জেলিফিশটি স্থানীয় ভাষায় ধলা নুইন্না এবং বৈজ্ঞানিক ভাষায় লবনেমইডেস রোবাস্টাস (Lobonemoides robustus) নামে পরিচিত। বিশ্বে প্রায় ৫.৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে এই জেলিফিশের।

মৃত জেলিফিশ পরীক্ষা করে দেখছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা

এর আগে গত ৩ আগস্ট বুধবার রাতে শহরতলীর দরিয়ানগর সৈকতে ভেসে আসে শতাধিক মরা জেলিফিশ। সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা এই জেলিফিশের নমুনা সংগ্রহ করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে কুয়াকাটা সৈকতে শত শত জেলিফিশ ভেসে আসে। তবে কক্সবাজার সৈকতে ইত:পূর্বে একসঙ্গে এত জেলিফিশ ভেসে আসার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি স্থানীয়দের।

এর আগে গত জুনের শুরুতে কক্সবাজার সৈকতের নাজিরারটেক মোহনায় অসংখ্য রাজকাঁকড়ার মৃতদেহ ভেসে আসে। গত ২০ মার্চ টেকনাফ সৈকতে ভেসে আসে একটি মরা ডলফিন।

একই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দরিয়ানগর-হিমছড়ি পয়েন্ট সৈকতের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে আসে যেখানে প্লাস্টিকের জুতা, স্যান্ডেল, ব্যাগ, দড়ি, জাল, ককসিট, কাঠ, বাঁশ এবং প্লাস্টিকের টুকরা ছাড়াও মরা কচ্ছপ, সাপ ও মস্তকবিহীন মৃতদেহ ছিল।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দুটি মরা ডলফিন ভেসে আসে। এর কয়েকদিন আগে ডলফিন দু’টিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতে খেলা করতে দেখা যায়।

গত বছর এপ্রিল মাসে পরপর দুইদিনে দু’টি মরা তিমি ভেসে আসে হিমছড়ি সৈকতে। একই সৈকতে ২০২০ সালের জুলাই মাসে দুই দফায় বর্জ্য-বন্যা দেখা দিলে বর্জ্যের সাথে মরা কচ্ছপ, সাপসহ আরো বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির মৃতদেহ ভেসে আসে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিআরটিসি বাসে আ.লীগের ব্যানার লজ্জাজনক : আমীর খসরু
পরবর্তী নিবন্ধদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: শেখ হাসিনা