পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বেড়াতে এসে কাপ্তাই হ্রদে জেগে ওঠা টিলায় আটকে থাকার সাড়ে তিন ঘণ্টা পর উদ্ধার পেয়েছে ১৭৫ জন পর্যটক।
৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ডুবোচরে আটকে পড়া চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের এসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অন্য একটি লঞ্চে করে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রাঙামাটির কোতোয়ালী থানা পুলিশের সহায়তায় হ্রদের মধ্যে আটকাবস্থা থেকে উদ্ধারের পর স্বস্তি ফিরেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। রাতেই তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবু তাহের ভূঁইয়া।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “হ্রদের তীরবর্তী বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরতে বের হয়ে ফেরার সময় লঞ্চটি চরে আটকে যায়। দীর্ঘ সময় সেভাবে থাকার পর সবাই চিন্তিতও হয়ে পড়ে। তখন একজন শিক্ষার্থী ৯৯৯ এ ফোন করে। তার কিছুক্ষণের মধ্যে কোতোয়ালী থানা থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং আমাদের লোকেশন জেনে আমাদের উদ্ধারে উপস্থিত হন এবং অন্য একটি লঞ্চযোগে আমাদের নিয়ে আসেন।”
এদিন সকালে চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা রাঙামাটি কাপ্তাই লেকে বেড়াতে আসেন। হ্রদে পানি কম থাকায় ছোট ছোট টিলাগুলো ভেসে উঠে, এমনই এক টিলায় আটকে যায় তাদের বহনকারি লঞ্চটি।
মাস্টার্সের ছাত্র সিরাজুল আমি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “শুভলং থেকে পুলিশের পলওয়েল পার্কে যাওয়ার সময় একটি চরের মতো জায়গায় লঞ্চটি আটকে যায়। ছাত্ররা ঝুঁকি নিয়ে পানিতে নেমে লঞ্চকে নামানোর চেষ্টা করেও তা ভাসানো যায়নি। এদিকে, সন্ধ্যা নেমে আসায় সবাই ভয় পেতেও শুরু করে। এমন সময় ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে কোতোয়ালী থানা পুলিশের সহায়তা মেলে।”
ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী সামশুন নাহার বলেন, “দিনের আলো থাকায় তখন ভয় পাইনি। যখন সন্ধ্যা নেমে আসছে তখন ভয় পাচ্ছিলাম। কী হবে, বাড়ি ফিরতে পারব কি না। চারদিকে পানি আর পানি। অন্ধকারের কারণে কোনো দিকে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরে পুলিশ যাওয়াতে মনে স্বস্তি পাই।”
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আমিন জানান, পুলিশ সুপারের ফোন পেয়ে তিনি ও এএসপি সার্কেল দ্রুত একটি দল নিয়ে তাদের উদ্ধারে নামেন। অন্ধকার হওয়ার কারণে তাদের খুঁজে পেতে কিছুটা সময় লাগে। লঞ্চে থাকা ১৭৫ জন সুস্থ আছেন।
কী কারণে লঞ্চটি চরে আটকে গেল এবং লঞ্চ মালিক ও দায়িত্বশীল কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না সেটাও খতিয়ে দেখার কথা বলেন তিনি।