চীনে ১৩২ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয়েছে বেসরকারি একটি বিমানসংস্থার একটি উড়োজাহাজ।
চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল প্রশাসন (সিএএসি) জানিয়েছে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে গুয়াংশি প্রদেশে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জেট ইঞ্জিন চালিত বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি স্থানীয় সময় সোমবার দুপুর ১টা ১১ মিনিট দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুনমিং থেকে যাত্রী নিয়ে গুয়াংজুর উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্যে দেখা গেছে, ২টা ২২ মিনিটে ৩২২৫ ফুট উচ্চতায় ৩৭৬ নট গতিতে চলমান থাকা অবস্থায় উড়োজাহাজটির ফ্লাইট ট্র্যাকিং শেষ হয়ে যায়।
দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংশির পার্বত্য এলাকায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেখানে জঙ্গলে আগুন ধরে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের সংখ্যা জানা যায়নি বলে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে।
সিসিটিভি আরও জানায়, উদ্ধারকারী বিভাগের কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের কারণ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজটি ছয় বছরের পুরনো ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট।
সিএএসি জানিয়েছে, উঝৌ শহরের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় উড়োজাহাজটি সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উড়োজাহাজটিতে ১২৩ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিল।
এর আগে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছিল, উড়োজাহাজটিতে ১৩৩ জন আরোহী ছিল।
এক বিবৃতিতে সিএএসি বলেছে, “সিএএসি জরুরি ব্যবস্থাগুলোকে সক্রিয় করেছে এবং ঘটনাস্থলে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ পাঠিয়েছে।”
উদ্ধারকারী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে চীনের গণমাধ্যম জানিয়েছে, উড়োজাহাজটির কাঠামো পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে আগুন ধরে আশপাশের বাঁশঝাড় ও গাছ পুড়ে যায়, পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
স্থানীয় সময় বিকাল বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে ফ্লাইটটির চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর গুয়াংজুতে নামার কথা ছিল।
ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্যে দেখা গেছে, ০৬২০ জিএমটিতে উড়োজাহাজটি ২৯১০০ ফুট উচ্চতায় ছিল, এর মাত্র দুই মিনিট ১৫ সেকেন্ড পরে এটি ৯০৭৫ ফুট উচ্চতায় নেমে আসে আর এর ২০ সেকেন্ড পরে এর শেষ অবস্থান ছিল ৩২২৫ ফুট উচ্চতায়। এরপর থেকে আরও কোনো ট্র্যাকিং রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
পরে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট সাদা ও কালো রঙ প্রদর্শন করে। কোনো উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর এয়ারলাইন্সগুলো এমনটি করে থাকে। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। এরপর বোয়িং চায়নার ওয়েবসাইটও সাদা-কালো প্রদর্শন করতে থাকে।
এই দুর্ঘটনার বিষয়ে বোয়িংয়ের মন্তব্য জানাতে রয়টার্সের জানানো অনুরোধে কোম্পানিটি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।