দীর্ঘ ৩০ বছর পর সেতু নির্মিত হচ্ছে লিচুবাগান ফেরিঘাটে

কাপ্তাই প্রতিনিধি | বুধবার , ১ মার্চ, ২০২৩ at ৯:২৩ অপরাহ্ণ

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী এবং চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা লিচুবাগানের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া কর্ণফুলী নদীতে লিচুবাগান ফেরিঘাটে দীর্ঘ ৩০ বছর পর সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে।

এই ফেরিঘাটে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রাণের দাবি ছিল স্থানীয় জনগণের। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।

আজ বুধবার (১ মার্চ) রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, “লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য একনেকের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়া করার পর সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।”

লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণের খবর শোনার পর থেকে কাপ্তাই, রাঙামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি জেলার সর্বস্তরের জনগণের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। এই খবরের পর থেকে এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। কেননা এতদিন দৈনিক আজাদীসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অনেক লেখালেখি এবং অনেক দেনদরবারের পরও লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণ করার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নাই।

আজ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে।

জানা গেছে, ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৩ সালে লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তৎকালীন যোগাওযোগ মন্ত্রী অলি আহমদ লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মিত না হয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলকে কর্ণফুলী নদীর উপর সেতু নির্মাণ করা হয়। এর পর থেকে লিচুবাগান ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য আর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সাংসদ দীপংকর তালুকদার বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈশিং লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণ করার জন্য আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেন।

এদিকে, লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মিত হবে এমন খবর শোনার পর আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্র চৌধুরী, কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাব্বির আহমেদ, জেলা পরিষদের সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমন দে, চন্দ্রঘোনা থানার ওসি শফিউল আজম, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমাসহ সর্বস্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাধারণ জনগণ।

স্থানীয়রা বলেন, লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু না থাকায় লিচুবাগান এবং রাইখালীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখানে সেতু নির্মিত হলে মানুষের ভোগান্তি কমার পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। পাশাপাশি কৃষি উন্নয়ন বাড়বে এবং মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র রাইখালীর প্রাক্তন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, “লিচুবাগান ফেরিঘাটে সেতু নির্মিত হলে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণার কাজেও গতি আসবে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে ধর্ষণ, চন্দনাইশে ধর্ষক গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধপ্রাথমিক বৃত্তির সংশোধিত ফল প্রকাশিত