তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে পাড়া-মহল্লায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরুর নির্দেশ রওশনের

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২৭ মে, ২০২৩ at ১১:৪৪ অপরাহ্ণ

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ কক্সবাজারের চকরিয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, “তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে গ্রামে, পাড়া, মহল্লায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করতে হবে।”

মতভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে নিয়ে এখনই নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

আজ শনিবার (২৭ মে) দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ একটি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয় কমিটির মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় বিরোধী দলীয় নেতা স্থানীয় চকরিয়া-পেকুয়া কক্সবাজার-১ নির্বাচনে আসনে শামসুল আলমকে দলীয় ও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড জোরদার করার নির্দেশনাও দেন রওশন এরশাদ।

তিনি বলেন, “তোমাদের পাশে আমি আছি, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তোমরা আমার সন্তান, তোমাদের দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি মামুন-দয়াল ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয় কমিটিকে। তোমরা মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাও, ইনশাল্লাহ আমাদের বিজয় হবে।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মামুনূর রশীদ বলেন, “দশ ট্রাক অস্ত্র ষড়যন্ত্রের হোতাদের মুখে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের কথা মানায় না। এদেশের মানুষ এখনো ভুলে যায়নি রাতের আঁধারে কাদের মদদে সেদিন বিশাল অবৈধ অস্ত্রের চালান খালাসের চেষ্টা করা হয়েছিল। সৎ পুলিশ অফিসার ও গ্রামবাসীর চক্ষু আড়াল করে কারা সেদিন বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরিয়ে নিতে চেয়েছিল। পল্লীবন্ধুর শাসনামলে এমন ঘটনা কখনই ঘটেনি।”

কাজী মামুন আরো বলেন, “তারাই (বিএনপি) এখন বিদেশী শক্তির পেছনে কোটি কোটি টাকার লবিং বাণিজ্যে বিনিয়োগ করে নিষেধাজ্ঞার মোড়কে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অক্ষুণ্নতা ধ্বংস করতে চায়।”

বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, “মনে রাখবেন বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নয়। কেউ এসে আপনাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে সেই সুযোগ নেই। এটা-সেটা জারি করে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করা যাবে না।”

বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাজী মামুন বলেন, “সবে তো সংসদের বাইরে, রাজনীতির বাইরে নিক্ষিপ্ত হওয়া থেকে সরে আসুন। প্রভুদের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না, নির্বাচনে এসে যাচাই করুন, জনগণ খাম্বা বাণিজ্য সমর্থন করে কি না।”

তিনি আরো বলেন, “ভাঙচুর ও জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি জনগণ এখন আর বিশ্বাস করে না। পল্লীবন্ধু কখনই এ ধরনের রাজনীতি সমর্থন করেননি। মানুষ এখন প্রতিনিয়ত জীবন-জীবিকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। দেখবেন গণতন্ত্র অনেক সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পথে হাঁটছে।”

কক্সবাজার জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব কাজী আবু ওমর মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক এমএ গোফরান, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াল কুমার বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য নাফিস মাহবুব, বান্দরবান জেলা জাপার আহ্বায়ক অ্যাড. কাজী নাসিরুল আলম, কক্সবাজার জেলা জাপার ও কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য মো. শামসুল আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আজিজ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের জুয়েল, আক্তার হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম জহির উদ্দিন ও জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মাস্টার সফিকুর রহমানসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সকালে বিমানযোগে কক্সবাজার পৌঁছেন বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মামুনূর রশীদ। পরে মোটর শোভাযাত্রায় তাকে চকরিয়ায় অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী রাশেদকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কার
পরবর্তী নিবন্ধসেই প্রকল্প পরিচালক চার মাস ধরে অনুপস্থিত