বঙ্গোপসাগরে ৩ মাছ ধরা ট্রলারে ডাকাতি

জলদস্যুদের হামলায় ১৮ মাঝিমাল্লা আহত

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ at ১০:৫১ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের উপকূলবর্তী গভীর বঙ্গোপসাগরে ৩টি মাছ ধরা ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় পাটুয়ারটেকের নিকটবর্তী সাগরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় জলদস্যুদের হামলায় তিনটি ট্রলারের ১৮ মাঝিমাল্লা আহত হয়। আজ বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে আহত মাঝিমাল্লারা ট্রলার নিয়ে ঘাটে পৌঁছে।

আহত মাঝিমাল্লারা হলেন কক্সবাজার শহরের কলাতলীর আবদুল গফুরের মালিকানাধীন এফবি সাঈদিয়ার মাঝি মো. রফিক (৪৫), জেলে মো. জামাল (৪০), আবদুল গনি ((৩৫), মোহাম্মদ ইসমাইল (৪০), মোহাম্মদ তৈয়ব (৪৫), বদি আলম (৪০), শহরের বাহারছড়ার জাফর আলমের মালিকানাধীন বোটের মাঝি মোহাম্মদ বেলাল (৩৫), জেলে ছৈয়দ হোসন (৪০), মোহাম্মদ সিরাজ (৩৫), মোহাম্মদ আনোয়ার আনু (৩০) ও মোহাম্মদ রফিক (৩০)। বাকীদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম বলেন, “জলদস্যুতার শিকার তিনটি বোটের দু’টি দরিয়ানগর ঘাটের। আগের দিন দরিয়ানগর ঘাট থেকে ৬ জন করে মাঝিমাল্লা নিয়ে বোট দু’টি সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। আহত মাঝিমাল্লারা বুধবার বিকাল চারটার দিকে ট্রলার নিয়ে ঘাটে পৌঁছার পর তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।”

প্রত্যক্ষদর্শী জেলেদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, জলদস্যুতার শিকার অপর বোটটি ইনানী ঘাটের। তবে বোটটির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

জলদস্যুদের হামলায় আহত এফবি সাঈদিয়ার মাঝি মো. রফিক বলেন, “আমরা মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে পাটুয়ারটেক উপকূলের নিকটবর্তী সাগরের ১৪ বিও (১৪ মিটার গভীরতা সম্পন্ন অঞ্চল) নামক স্থানে মাছ ধরছিলাম। এসময় ৪৫ থেকে ৬৫ ঘোড়া (অশ্বশক্তির) মেশিনের একটি বোট নিয়ে ১৮/২০ জনের একদল অস্ত্রধারী জলদস্যু একে একে তিনটি ট্রলারে ডাকাতি করে। জলদস্যুরা তিনটি ট্রলারের মাছ, জালসহ সকল সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি একটি কাঁচা মরিচ পর্যন্ত রাখেনি।”

তিনি বলেন, “পরে জলদস্যুরা তিনটি ট্রলারকে টেনে ১৮ বাম (১৮-১৯ মিটার গভীরতা সম্পন্ন অঞ্চল) নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয়। যেখান থেকে উপকূলে পৌঁছাতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।”

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, চলতি শীত মৌসুমে কক্সবাজারের পাটুয়ারটেক থেকে সেন্টমার্টিন উপকূলের নিকটবর্তী প্রায় ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গভীর বঙ্গোপসাগরে চান্দাসহ উচ্চমূল্যের মাছগুলো ব্যাপকভাবে ধরা পড়ছে। এর ফলে বেশিরভাগ মাঝিমাল্লা চান্দা জাল নিয়েই উপকূলে মাছ ধরছে কিন্তু সাগরে ওৎ পেতে থাকা জলদস্যুরা মাঝিমাল্লাদের সর্বস্ব লুট করছে।

তিনি দাবি করেন, গত এক মাসে কক্সবাজার উপকূলে অন্তত তিন ডজন ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। জলদস্যুদের উৎপাতে মাঝিমাল্লারা সাগরে যাচ্ছে আতংক নিয়ে।

তিনি অবিলম্বে সাগরের জলদস্যুতা নির্মূলের জন্য কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় দুই সন্তানের জননীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে চিরকুট লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা