চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চেচুরিয়া ঘোনা পাড়া এলাকায় রাশেদা বেগম(৫০) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা এবং গণ্ডামারায় মো. বজলুল হক (৬১) নামে এক বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে পুলিশ আটক করে।
আটকরা আজ বুধবার (১২ জুলাই) বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্য্যবিধির ১৬৪ ধারামতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হামিদের কাছে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
স্থানীয় ও ঘটনার তথ্যমতে, বাঁশখালীর বৈলছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম চেচুরিয়া ঘোনা পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী রাশেদা বেগমকে গত ৯ জুলাই রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পরে ১০ জুলাই সকালে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
জানা যায়, গাঁজা সেবনে বাধা দেওয়ায় রবিউল হাসান মেজবাহ(২২) এবং তানভীর ইসলাম শাওন (২৩) নামে দু’জন তাকে হত্যা করে।
নিহত রাশেদা বেগমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এ অপরাধীদের আটক করার পর তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ঘটনার ব্যাপারে বাঁশখালী থানায় ১১ জুলাই মামলা রুজু করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে আটক করলেও রবিউল হাসান মেজবাহ(২২) এবং তানভীর ইসলাম শাওন (২৩) নামে দু’জন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় মেয়ের জামাই মৃত রাজা মিয়ার পুত্র মো. জাকের হোসেন (৩৮), গ্রাম পুলিশ সদস্য আবদুল গফুর (৫৫) ও দুদু মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান(৪৫)কে এ ঘটনা থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, আজ বুধবার বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হামিদের কাছে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি প্রদান করে রবিউল হাসান মেজবাহ(২২) এবং তানভীর ইসলাম শাওন (২৩)।
অপরদিকে, গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে গণ্ডামারা ইউনিয়নের গণ্ডামারা বাজারের গাউছিয়া হোটেলে ছুরিকাঘাতে মো. বজলুল হককে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত নুরুল আজিজ সিকদার প্রকাশ নুলাইচ্ছা পাগলা আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় গতকাল মঙ্গলবার মামলা (১১/০৭/২৩) রুজু করা হয়। ঘটনার একমাত্র আসামী নুরুল আজিজ সিকদারও আজ বুধবার বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হামিদের কাছে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
ঘটনার ব্যাপারে রাশেদার স্বামী নুরুল ইসলাম বলেন, “আমার দু’কন্যা মা হারা হলো। অপরাধী ধরা পড়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।”
অপরদিকে, ছুরিকাঘাতে নিহত মো. বজলুল হকের ভাই ছৈয়দুল হক সওদাগর বলেন, “আমার ভাইয়ের ৫ ছেলে ও ৩ কন্যা সন্তান পিতৃহারা হলো। এখন তাদের ভরণপোষণ সহ সামগ্রিক দেখাশোনার দায়িত্ব কে নেবে সেই চিন্তায় আছি। অপরাধী যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো কাজ করার সাহস না পায় তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।”
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন জানান, বাঁশখালীর বৈলছড়ি এবং গণ্ডামারায় খুনের ঘটনায় প্রকৃত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা বাঁশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্য্যবিধির ১৬৪ ধারামতে স্বীকার করেছে।”