বাঁশখালীর আলোচিত লেয়াকত চেয়ারম্যান গ্রেফতার

এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন

বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৮:৫১ অপরাহ্ণ

বাঁশখালীর গণ্ডামারার আলোচিত চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলীকে আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে।

অপরদিকে, বাঁশখালীতে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের বাইরে প্রকল্পের টেন্ডার কাজ নিয়ে গতকাল বুধবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ সদস্য সহ ৮/১০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রকল্প এলাকায় বালি ও মালামাল সরবরাহ নিয়ে ঠিকাদার সায়মন ও চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা সংঘটিত হয় বলে সূত্রে জানা যায়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঁশখালী থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলাগুলো হলো গণ্ডামারা পাওয়ার প্ল্যান্টে দায়িত্বরত এসআই লিটন চাকমা বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে, ডিবি পুলিশের এসআই হুমায়ুন কবিরের অস্ত্র মামলা এবং ঠিকাদার মো. সায়মন কায়ছার বাদী হয়ে চাদাঁবাজি ও মারধরের ঘটনায়।

তিনটা মামলা করা হলেও মামলায় কে কে ও কয়জনকে আসামী করা হয়েছে তা গোপন রাখা হয়েছে।

ঘটনার সময় নিজে আহত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে মামলার কথা জানান এসআই লিটন চাকমা।

ঘটনা ও মামলার ব্যাপারে ঠিকাদার মো. সায়মন বলেন, “ট্রাকে করে প্রকল্পে পাইপ দিতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকজন খালেক ও নবী আলমসহ অন্যরা আমার গাড়িতে হামলা চালায়। গাড়িতে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মালামাল ছিল। হামলা ও মালামাল নষ্টের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।”

এদিকে, বুধবার রাতে ঘটনার সময় ঠিকাদার সায়মন ও শ্রমিক সহ এসআই লিটন চাকমা (৩৯), এসআই মো. মাসুদ (২৮), এএসআই নজরুল ইসলাম (৩৬), এএসআই আব্দুল খালেক (৩২) ও পুলিশ সদস্য মফিজুল আলম (৩০) আহত হয়ে বাঁশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে বলে হাসপাতাল ও থানা সূত্রে জানা যায়।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলীকে বাঁশখালী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি এবং তিনি চট্টগ্রামের ডিবি কার্যালয়ে রয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ এস আলম ও চীনের সেফকো থ্রি’র অর্থায়নে চলমান ১,৩২০ মেগাওয়ার্ট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট-এর বাইরে পাইপ ফিল্টার টেন্ডার নিয়ে সংঘটিত ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সরেজমিন এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব-এর অবস্থান রয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক মো. ফরহাদ জানান, গতকাল সন্ধ্যায় প্রকল্পের সড়কে সংঘটিত ঘটনার পর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে তবে কী কারণে এ ঘটনা তা বিস্তারিত জানাতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট-এর প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. ফারুক আহমদ বলেন, “এটা যেহেতু প্রকল্পের বাইরের ঘটনা তাই আমি বিশেষ কিছু জানি না।”

অপরদিকে, বাঁশখালীর আলোচিত চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলীকে গ্রেফতারের ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নূর আহমেদ বলেন, “বাঁশখালী থানার একটি মামলায় মো. লেয়াকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত বাঁশখালী থানা থেকে আমাদের রিকুইজিশন দেওয়া হলে আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করি। তাকে বাঁশখালী থানায় হস্তান্তর করা হবে।”

এ ব্যাপারে জানার জন্য বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিনের কাছে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দেশের সর্ববৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি গত ১৪ জানুয়ারি জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে। চলতি এপ্রিল-মে থেকে পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বলে প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা উদ্বোধনকালে জানিয়েছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওভারটেক করতে গিয়ে উল্টে গেল ট্রাক
পরবর্তী নিবন্ধআবারও অপরাজিত সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ