পুনেতে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে তাদের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২৫৬ রানে। হারাতে হয়েছে ৮ উইকেট।
আগের দিন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলে গিয়েছিলেন প্রথম ১০-২০ বল দেখতে। সেটি ভালোভাবে করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। প্রথম পাঁচ ওভারে এসেছিল ১০ রান, উইকেট যায়নি। কোচের পরের কথাটাও দুই ওপেনার শুনছিলেন ভালোভাবেই।
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি। তাদের ওই রানই এতদিন ধরে ছিল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। সেটি ছাড়িয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস।
কিন্তু আরও বড় করার আফসোসটা হয়তো থেকে যাবে তবুও। এর আগে বিশ্বকাপে সব উইকেটেই শতরান ছাড়ানো জুটি ছিল কেবল সাতটি। সাত রানের জন্য ওই তালিকায় অষ্টম নাম হওয়া হয়নি তানজিদ-লিটনের। মাঝে একবার এলবিডব্লিউ আউট হয়েছিলেন তানজিদ; কিন্তু তখন আবেদনই করেনি ভারত।
পরে তিনি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন কুলদ্বীপ যাদবের বলে। ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া সাকিব আল হাসানের বদলে নেতৃত্বটা এসেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর কাঁধে। তিনি সেটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি অন্তত ব্যাট হাতে। ১৭ বলে ৮ রান করে তিনি এলবিডব্লিউ হন রবীন্দ্র জাদেজার বলে।
ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে এতদিন ধরে কথা হচ্ছিল অনেক। মেহেদী হাসান মিরাজকে উপরে খেলাতে গিয়ে সব উলোট পালোট; বলা হচ্ছিল এমন। এদিনও অবশ্য চারেই আসেন মিরাজ। সম্ভবত তার ইনিংসে এটিও বোঝা গেছে, প্রতিদিন ‘মেক শিফট’ করে কাজ হয় না। ১৩ বলে ৩ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দেন মিরাজ। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ ধরেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক।
লিটন এ ম্যাচে শুরু করেছিলেন দারুণ। যেমন উইকেট ছিল, তার জন্য আদর্শ। বড় রানের আশাটাও তাই আসে স্বাভাবিকভাবে। অথচ এই ব্যাটার আউট হলেন ‘কী করলেন এটা’ এমন আফসোস নিয়ে। জাদেজার লোপ্পা বলে লং অফে ক্যাচ দেন এই ওপেনার। ৭ চারে ৮২ বলে ৬৬ রান করেন লিটন।
তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসা তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটিংজুড়ে ছিল কেবলই আফসোস। সিঙ্গেলস বের করতে পারছিলেন না, আসছিল না বাউন্ডারিও। ৩৫ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি না হাঁকিয়ে স্রেফ ১৬ রান করেন হৃদয়। সম্ভবত ম্যাচের প্রেক্ষাপটও বদলে যায় এতে।
শুরুতে মনে হওয়া সাড়ে তিনশ রান পরে এসে ঠেকে আড়াইশর আশায়। কিন্তু তার জন্য ক্রিজে থাকতে হতো মুশফিকুর রহিমকে। তিনি আউট হন জাদেজার দুর্দান্ত এক ক্যাচে। বুমরাহর স্লোয়ার ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে খেলেন মুশফিক, টাইমিংও হয় ভালো। কিন্তু ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন জাদেজা। কিছুক্ষণ পর উইকেট হারান নাসুম আহমেদও। তিনি বিদায় নেন ১৪ রান করে।
পরের রানের কৃতিত্বটা কেবল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরই। ব্যাট হাতে তিনি খেলেন দারুণ ইনিংস। তবে চার রানের আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নিতে হয় তাকে। শেষ ওভারে বুমরাহর করা দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন তিনি। এর আগে খেলে যান ৩৬ বলে ৪৬ রানের এক দারুণ ইনিংস। শেষদিকে শরিফুলের ৩ বলে ৭ রানের ক্যামিওতে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
ভারতের পক্ষে জোড়া উইকেট পান দুই পেসার জসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ। সমান উইকেট পান জাদেজাও। একটি করে উইকেট নেন কুলদ্বীপ যাদব ও শার্দুল ঠাকুর।