বান্দরবানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট নিরসনে ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান চালু করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বন্যা পরবর্তী সুপেয় পানির সংকট নিরসনে আজ শনিবার (১২ আগস্ট) দু’টি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করেছে। সেনাবাহিনী এবং পৌরসভার পক্ষ থেকেও সুপেয় পানি সরবরাহ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বান্দরবান জেলার অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। বন্যায় ময়লা আবর্জনায় স্বচ্ছ পানির উৎসস্থলগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জেলায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংকট নিরসনে কয়েকদিন ধরেই গাড়িতে করে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো সুপেয় পানি সরবরাহ করে আসছে সেনাবাহিনী। পৌরসভার পক্ষ থেকেও গাড়িতে করে পানি সরবরাহের কাজ চালানো হচ্ছে।
বন্যায় জনস্বাস্থ্যের পৌর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংকট নিরসনে ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ।
স্থানীয় ভুক্তভোগী মো. শাহাজালাল ও মেহেদী হাসান বলেন, “বন্যা পরবর্তী প্রধান সমস্যায় পরিণত হয়েছে সুপেয় পানি। স্বচ্ছ পানির উৎসস্থলগুলো বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। সেনাবাহিনী, পৌরসভার পক্ষ থেকে সুপেয় পানি দেয়া হলেও চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত নয়। তাই দ্রুত পানি সরবরাহ কেন্দ্র চালুর দাবি জানাচ্ছি।”
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কনভেনার মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, “বন্যায় জনস্বাস্থ্যের পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিকল হয়ে পড়েছে। ত্রুটিপূর্ণ মেশিনগুলো ও সংযোগ লাইন মেরামতের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা দ্রুত চালু করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। তারপরও পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংকট নিরসনে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট চালু করা হয়েছে দু’টি। একেকটি প্ল্যান্টে
ঘণ্টায় ২ হাজার লিটার করে সুপেয় পানি পাওয়া যাচ্ছে। পুকুরের পানি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিশুদ্ধ করে তা বোতলে করে দুর্গত এলাকাগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে।”
বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে বলেন, “বন্যায় পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য মজুদ রাখা প্রায় ছয় টন ফিটকিরি, দুই টন ব্লিচিং পাউডার এবং তিনটি উচ্চ ক্ষমতার মোটরসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল হওয়ায় ত্রুটিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে পৌর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে আশা করছি।”