টানা ছুটিতে বান্দরবানে প্রকৃতির নির্মল ছোঁয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। দর্শনীয় স্থানগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণায়। তবে তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সশস্ত্র বাহিনীদের আতঙ্কে অন্য বছরের তুলনায় এবার পর্যটকের চাপ কম। আশানুরুপ বুকিংও আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলোতে হয়নি বলে জানালেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হচ্ছে বান্দরবান। পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এ জেলায় পাহাড়ে রয়েছে চোখ জুড়ানো সব সৌন্দর্য। এখানের পাহাড়ের প্রকতি এবং শৈল্পিক ছোয়ায় সাজানো দর্শনীয় স্থান নীলাচল, মেঘলা, বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুক, নীলগিরি, নীলদিগন্ত, শৈলপ্রপাত ঝর্না, রুপালী ঝর্না স্পটগুলোতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে পর্যটকদের।
পর্যটকরা কখনো লেকের পানিতে প্যাডেল বোটে, কখনো ক্যাবল কারে এবং কখনো নীলাচলের রোমাঞ্চকর দোলনায় প্যারাসেইলিংয়ে আকাশে উড়ার স্বাদ নিচ্ছেন। তবে যৌথ বাহিনীর অভিযানের কারণে নিরাপত্তা বিবেচনায় রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে অনিদিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় দুর্গমাঞ্চলের দর্শনীয় স্থানগুলোতে যেতে পারছেন না পর্যটকরা।
বেড়াতে আসা পর্যটক সাজ্জাদ রহমান, শারমিন শাম্মি বলেন, এখানের চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ। চারদিকে সবুজের সমারোহ। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা দৃষ্টিনন্দন সড়কগুলো এ জেলার সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণে। চোখে না দেখলে এই সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।”
বান্দরবান হোটেল-রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, কয়েকদিনের টানা বন্ধে আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য জমে উঠেছে। তবে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবারের ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ বুকিং হয়নি। আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট গেস্ট হাউজগুলোর ৫০% রুমও ভাড়া হয়নি।
তিনি আরো জানান, তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও আতঙ্কে পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ায় চরমভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখোমুখি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। নিষেধাজ্ঞা খুললেও এ পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে বলা মুশকিল।
এদিকে, ভ্রমণপিপাসুদের নিরাপত্তা, আরামদায়ক আনন্দময় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং হোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তীবরীজি বলেন, “পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাময় বান্দরবানে নতুন নতুন দর্শনীয় পর্যটন স্পট খুঁজে বের করা হচ্ছে। পুরনো স্পটগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সংযোজন করা হচ্ছে নতুন নতুন বিনোদন মাধ্যম। পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধে যৌথবাহিনীর অভিযানে নিরাপত্তা বিবেচনায় রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি এ তিন উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে অনিদিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। সেগুলো ছাড়া অন্যসবগুলো স্পটে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াতে পারছেন।”