বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফের গোলাগুলি

আতঙ্কে সীমান্তবাসী, বিজিবির নিরাপত্তা জোরদার

বান্দরবান প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:৫৮ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফের গোলাগুলি এবং মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় বাংলাদেশ সীমান্তবাসীরা।

মূলত স্বাধীনতাকামী মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) বাহিনীর সাথে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর মধ্যে এ সংঘর্ষ ও লড়াই চলছে দুয়েকমাস ধরে।

মিয়ানমার সরকার এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের মধ্যে চলমান সংঘাতে ছোড়া মর্টারশেল এবং বুলেট মাঝে মধ্যেই সীমান্ত পেরিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ ভূখন্ডেও। শুক্রবারও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ভারী অস্ত্রের একটি বুলেট এসে পড়েছিল। কিন্তু সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি’র পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস জানান, বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল নিক্ষেপ এবং গোলাগুলির ঘটনাগুলো ঘটছে।

কিন্তু সীমান্ত ঘেঁষা ঘুমধুম, তুমব্রু, রেজু-আমতলী, বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বাসবাসকারী বাংলাদেশীরা শব্দ শুনতে পাচ্ছে। মর্টারশেলের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে তারা।

শুক্রবার বিকালে মিয়ানমারের ছোড়া একটি বুলেটও এসে পড়েছিল তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। তার আগে দু’বার মর্টারশেল এসে পড়েছিল এখানে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস, বিদ্রোহ দমনে ব্যবহৃত মিয়ারমারের ফাইটার হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমান আকাশসীমা লংঘন করে ঢুকে পড়েছিল বাংলাদেশ সীমানায়। বিষয়গুলো সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারীদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। সীমান্তবাসীরা আতঙ্কিতও হয়ে পড়েছে।

তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসন এবং সরকারের অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নজরদারি বাড়িয়েছে।

এদিকে, সীমান্তঞ্চলের বাসিন্দাদের দাবি, ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের পাহাড়ি এলাকায় আরাকান আর্মির শক্ত ঘাঁটি রয়েছে।

মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষেই মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবস্থান টার্গেট করে মর্টারশেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

ক’দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল শুক্রবার বিকাল থেকেই নতুনভাবে সরকারী বাহিনী জোরালো হামলা শুরু করেছে। বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির একটি আস্তানাও মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, “মর্টার শেল এবং গোলাগুলির বিকট শব্দে আতঙ্কিত সীমান্তবাসীরা। থেমে থেমে মর্টারশেল হামলার শব্দ ঘুমধুমবাসীর চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়া লাগোয়া চাষাবাদের জমিতে ভয়ে আতঙ্কে কাজ করতে যেতে পারছে না চাষীরা। সীমান্ত সড়ক নির্মাণ রাস্তার কাজও থমকে গেছে। মূলত সীমান্তের ওপারে পাহাড়ে আরাকান আর্মি সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অবস্থান লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হচ্ছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅস্ত্রসহ ১১ জলদস্যু আটক
পরবর্তী নিবন্ধবাবুল আক্তারের অভিযোগ তদন্ত হলেই বোঝা যাবে :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী