আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে বম জনগোষ্ঠীর ৩ জনকে হত্যার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে আশপাশের এলাকাগুলোতে।
আজ মঙ্গলবার (৯ মে) ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইখ্যং পাড়ায় এলাকায় পাহাড়ের বম জনগোষ্ঠীর ৩ জনকে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্তের পর মরদেহগুলো বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
সংগঠনের সভাপতি লালজার বম বলেন, “নিহত তিনজনের মরদেহ গ্রহণ করেছি। মরদেহগুলো ধর্মীয় রীতি অনুসারে দাফন করা হবে। নিহতরা হলেন রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নেমথাং বম এবং ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলের চালক লাল লিয়ান ও সিম লিয়ান।
পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর সাথে সম্পৃক্ত এমন ধারণা থেকেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন মগ লিবারেশন পার্টি (মগ বাহিনী) তাদের ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে, গতকাল সোমবার রোয়াংছড়িতে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক) এবং মগ লিবারেশন পার্টি (মগ বাহিনী)-এর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
গত মাসের ৭ই এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খামতান পাড়া এলাকা থেকে বম জনগোষ্ঠীর ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী।
এরপর ২৭ এপ্রিল রুমা উপজেলার মুয়ালপি পাড়া এলাকা থেকে বম জনগোষ্ঠীর একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা সকলেই পাহাড়ের বম জনগোষ্ঠীর বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চীন ন্যাসনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর সদস্য বলে জানা গেছে।
এদিকে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর সাথে কুকি চীন ন্যাসনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে কয়েক মাস ধরে। গোলাগুলি হয়েছে গতকাল সোমবারও। তবে নতুন করে সশস্ত্র সংগঠন মগ বাহিনীও জড়িয়ে পড়েছে সশস্ত্র সংঘাতে।
অপরদিকে, গতকাল সোমবার বম জনগোষ্ঠীর ৩ জনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।আশপাশের গ্রামবাসীরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীসহ যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, গুলিবিদ্ধ ৩ জনের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর বম জনগোষ্ঠীর সংগঠন বম এসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। মামলার প্রস্তুতি চলছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।