অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে ইভিএম কার্যকর নয় দাবি করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, “এটা একটা দুর্বল এবং জালিয়াতির যন্ত্র। এ যন্ত্র দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে ফলাফল চায়, তাই সম্ভব। এটাতে যাচাই-বাছাই, অডিট করা এবং ফলাফল পুনঃগণনা করার সুযোগ হবে না। ইভিএম ব্যবহার করে বাইরের কেউ জালিয়াতি করতে পারবে না। তবে নির্বাচন কমিশনের স্যুট-কোট পরিহিতের দিয়ে জালিয়াতি করা সম্ভব অর্থাৎ যারা বেড়া তারাই ক্ষেত খাবে।”
গাইবান্ধার-৫ আসনের নির্বাচন সঠিকভাবে করতে পারেনি বরং তদন্তের নামে রাঘব-বোয়ালদের ছাড় দিয়ে চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ‘নামকাওয়াস্ত তদন্ত’ করে বিষবৃক্ষ রেখে ডালপালা ছেঁটে ফেলেছে।
আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে এসে আরডিআরএস মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গাইবান্ধা ৫-আসনের উপ-নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশন ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে যেভাবে অনিয়ম উৎখাত করেছে তা একটি ইতিহাস। পুরো নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন বাতিল করে তদন্ত কমিটি গঠন করাও ইতিহাস। তবে তদন্তে যা বেরিয়ে এসেছে তা খুব একটা ইতিবাচক নয়। সেখানে রাঘব-বোয়ালরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেল, ধরা পড়ল চুনোপুঁটিরা। দুর্নীতি বা অনিয়মের যে বিষবৃক্ষ সেটার ডালপালা ছেঁটে দেওয়া হয়েছে কিন্তু বিষবৃক্ষটা ঠিকই আছে। এখানে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ। তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। অথচ তারা তা করতে পারেনি। একটা তদন্ত করল কিন্তু কারা দায়ী সেটা বের করতে পারল না। তাহলে এটাতো নামকাওয়াস্তে তদন্ত।”
সুজন সম্পাদকের অভিযোগ, গাইবান্ধায় রাঘব-বোয়ালরা পার পেয়ে গেছে। ইসির জালে আটকা পড়েছে চুনোপুঁটিরা। এ নির্বাচন বার্তা দিয়েছে, যারা ক্ষমতাসীন বা রাঘব-বোয়াল তারা অন্যায় করেও সহজে পার পেয়ে যাবে।
১০ ডিসেম্বর বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকার দলীয়দের পাল্টা ‘খেলা হবে’ মন্তব্য সম্পর্কে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “এখন যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সঙ্গে সংহতিপূর্ণ নয়। এটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের প্রতিফলন। আসলে কোন খেলা হবে সেটা আমরা নিজেরাও জানি না কিন্তু এই ধরনের ‘খেলা হবে’ মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের রাজনীতিবিদরা রাজনীতিকে খেলাতে পরিণত করেছেন। রাজনীতি হচ্ছে জনকল্যাণের পেশা, মানুষের মঙ্গল করার পেশা অথচ এটা এখন খেলাতে পরিণত করা হয়েছে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রংপুর মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু, সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফারুক, হাঙ্গার প্রজেক্ট ও সুজনের রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়কারী রাজেশ দে রাজু।