নাটকীয়তার ম্যাচে এবার সিলেটের কাছে হার নোয়াখালীর

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

অবিশ্বাস্য জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে গেল নোয়াখালী এক্সপ্রেস। আগের দিন তাদের থামিয়েছিল চট্টগ্রাম। আর গতকাল তাদের থামিয়ে দিল সিলেট টাইটান্স। গতকাল বিপিএলের দ্বিতীয় দিন ১ উইকেটে জিতেছে মেহেদী হাসান মিরাজের সিলেট। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নোয়াখালীর ১৪৩ রান পেরোতে তাদের খেলতে হয় শেষ বল পর্যন্ত। অসাধারণ হ্যাটট্রিকে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েও হারের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হলো মেহেদি হাসান রানাকে। টিটোয়েন্টিতে বাংলাদেশের অষ্টম বোলার হিসেবে টানা তিন বলে তিন উইকেট নিলেন তিনি। আর বিপিএলে সব মিলিয়ে তিনি হ্যাটট্রিক করলেন ৯ম বোলার হিসেবে। দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা নাগালেই রেখেছিলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। সেই রান তাড়ায় পারভেজ হোসেন দলকে রেখেছিলেন সহজ জয়ের পথে। এক সময়ে সিলেটের ২৭ বলে প্রয়োজন ছিল ২৭ রান, হাতে ছিল ৭ উইকেট। সেই সময়ে পারভেজ বোল্ড হলে নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায় চিত্র। পরের ওভারে কেবল ২ রান দিয়ে আফিফ হোসেনকে বিদায় করেন রেজাউর রহমান রাজা। এরপর, নো দিয়ে শুরু করা ওভারে রানা পরপর তিন বলে বিদায় করেন মিরাজ, নাসুম আহমেদ ও খালেদকে।

হাসান মাহমুদের করা ১৯তম ওভারে ৬ রানের বেশি নিতে পারেননি মোহাম্মদ আমির ও ইথান ব্রুকস। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। শুরুটা দারুণ করেন সাব্বির হোসেন। প্রথম বল খেলেন ডট। পরের বলে করে বসেন গড়বড়, হয় ‘নো বল।’ ফ্রি হিটে ছক্কা মারার পর চারে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন ব্রুকস। নাটকের শেষ নয় সেখানেই। পরের বলে কিপারের হাতে বল রেখে অসম্ভব একটি রানের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে, মাঝপথ থেকে ফেরার পথে পিচে পড়ে যান ব্রুকস। সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরাসরি থ্রোয়ে তাকে রান আউট করে দেন জাকের আলি। পরের বলে ওয়াইড করে বসেন সাব্বির। শেষ বলে ব্যাটে খেলতে পারেননি সালমান ইরশাদ। তবে কোনোমতে ১ রান নিতে পারেন তিনি ও আমির। একরাশ হতাশা নিয়ে এলবিডব্লিউর রিভিউ নেয় নোয়াখালী, তাতে কাজ হয়নি। বল বেরিয়ে যেত লেগ স্টাম্পের উপর দিয়ে।

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নোয়াখালীর শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। আমিরের প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন মাজ সাদাকাত। পরের ওভারে খালেদের বলে কট বিহাইন্ড হন আরেক ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান। সেই ওভারেই এলবিডব্লিউ হন হায়দার আলি। জোড়া শিকারের সঙ্গে মেডেন, খালেদের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। নোয়াখালীর প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই বিদায় নেন শূন্য রানে। দলটি তিন উইকেট হারায় কেবল ৯ রানে। থিতু হয়ে ফেরেন অধিনায়ক সৈকত আলি ২৯ বলে ২৪ রান করে। নিজেদের সেরা জুটি নোয়াখালী পায় ষষ্ঠ উইকেটে। মাহিদুলের সঙ্গে জাকেরের জুটিতে রান আসে দ্রুত। চারটি চারে ১৭ বলে করেন ২৯ রান। জাকেরকে ফিরিয়ে ৩৯ বলে গড়া ৬৬ রানের জুটি ভাঙেন খালেদ। পরের বলে নেন রেজাউরের উইকেট। শেষ বলে ছক্কায় দলের রান ১৪০ পার করেন মাহিদুল। ৫১ বলে তিন ছক্কা ও এক চারে তিনি করেন ৬১ রান। ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সিলেটের সফলতম বোলার খালেদ। সাইম আইয়ুব ২ উইকেট নেন ২৫ রানে। রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটের। হাসানের দ্বিতীয় বলে কট বিহাইন্ড হন সাইম। হাসানের পরের ওভারে দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। দুই চার মেরেই থেমে যান জাকির হাসান। ৩৪ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সিলেট।

সেখান থেকে দলকে কক্ষপথে ফেরান পারভেজ ও মিরাজ। ৩৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি পারভেজ। জাহির খানের বল ভুল লাইনে খেলার মাশুল দেন বোল্ড হয়ে। ভাঙে ৬৬ বল স্থায়ী ৮৩ রানের জুটি। ৪১ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৬০ রান করেন পারভেজ।

যে ম্যাচ যাচ্ছিল সাদামাটা সমাপ্তির দিকে। পারভেজের বিদায়ের পরের ধসে সেই ম্যাচ জায়গা করে নিল বিপিএলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের ছোট্ট তালিকায়। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার রানা। বাকি তিন মূল বোলারও ভালো করেন। কিন্তু পঞ্চম বোলারের খরুচে বোলিংয়ে পেরে উঠেনি নোয়াখালী। ম্যাচ সেরা হন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। আজ বিপিএলে কোন খেলা নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধময়মনসিংহে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রেলপথে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধমনোনয়নপত্র নিলেন জাতীয় পার্টির একাংশের শীর্ষ নেতারা