বিশ্বাসের ভঙ্গুরতা

পারভীন রব্বানী | বুধবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

উইলিয়াম শেক্সপীয়ার বলেছেন, ‘যাকে তুমি সবচেয়ে বেশী বিশ্বাস করো,আঘাতটা প্রায়শ সেখান থেকেই আসে।’ বিশ্বাসটা এমন এক শক্তি যা শুধু সম্পর্ককে মজবুত করে না, নিজের আত্মা, মনকেও পরিশোধিত করে।

জীবনে চলার পথে সংসার, কর্মক্ষেত্র সকল ক্ষেত্রেই মাঝে মাঝে আমরা দোলাচলে দুলি..কাকে বিশ্বাস করবো? নাকি অবিশ্বাসের খাতায় সবাই থাকবে। কিন্তু কাউকে না কাউকে বিশ্বাস করতেই হয়। বেশ কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া মোহাম্মদপুরে একসাথে মা/ মেয়ের মৃত্যুকাণ্ড আমাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়ে গেছে, সাথে সাথে সচেতনতাকেও ঘা দিয়ে গেছে। এই ধরনের ঘটনা আমরা আগেও দেখেছি, এখনো ঘটছে অহরহ। এখানে আমাদের কিছুটা গাফিলতি, কিছুটা ভাগ্যও আছে।

অফিসে যাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করে আমরা গোপনীয়, জরুরি কিছু কাজ দেই..একসময় সেই জন বিশ্বাসের অমর্যাদা করে পথে বসিয়ে দেয় মালিক কে। এই ধরনের কিছু ঘটনা কম বেশী অনেক অফিসেই ঘটে। এক্ষেত্রে কিছুটা দায়ভার নিজেদেরও থাকে। সর্বক্ষণ কাউকে মনিটর করাও অসম্ভব।

কিছু বাসা বাড়ির সমস্যা আরো ভয়ংকর। যেসব মায়েরা অফিস করেন, বাচ্চাদেরকে বুয়াদের কাছে রেখে তারা তো রীতিমতো জিম্মি থাকেন। সবার তো আর মা কিংবা শাশুড়ি অথবা কোন বয়স্ক আত্মীয়স্বজন থাকেন না দেখভাল করার জন্য। মা রা বাসায় সিসি টিভি লাগান। বাচ্চাদের নিয়ে সর্বক্ষণ তটস্থ। এ ব্যাপারে বহু ঘটনা আমরা দেখেছি।

আমাদের দেশের সিস্টেম বিদেশ থেকে অনেকটা ভিন্ন। তাই বাসা বাড়িতে হেল্পিং হ্যান্ড বা কাজের বুয়া ছাড়া চলা একটু কষ্টকর। তবে বুয়া রাখার ব্যাপারে অবশ্যই বিশ্বস্ততার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোন সোর্স থেকে আমরা কাজের মানুষ নিবো, তার এনআইডি কার্ড, প্রয়োজনবোধে তার গ্রামের বাড়িতে যেয়েও তার সত্যিকারের ঠিকানা জানতে হবে। যতো কঠিনই হোক, নিজেদের স্বার্থে ই করতে হবে। জানতে পারা যায়, কিছু সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতকারী বিভিন্ন বাড়ির কেয়ারটেকার, বা দারোয়ানদের যোগ সাজশে এই ধরনের অপকর্ম করার সাহস পায়। সব সময় সজাগ এবং সাবধানে থাকতে হবে। ঘটনা ঘটে গেলে, কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। আমাদের একসাথে এই ধরনের অপকর্ম রুখতে হবে। তবেই সমাজ বাঁচবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুধুই শূন্যতা
পরবর্তী নিবন্ধপরিবারের জন্য