আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায়

পাঁচ দিনের রিমান্ড

| মঙ্গলবার , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার শাহরিয়ার আলী বলেন, মামলা হয়েছে, আনিস আলমগীরকে আমরা গ্রেপ্তার দেখিয়েছি।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। এই মামলায় আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। এই মামলায় আরও তিন আসামি হলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, মারিয়া কিসপট্টা (ফ্যাশন মডেল) ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজের (উপস্থাপক)। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে পুলিশ। এদিকে এ মামলায় আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। খবর বিডিনিউজের।

গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রোববার রাত ৮টার পর সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এরপর মধ্যরাতে ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য আরিয়ান আহমেদ আনিস আলমগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনেন। তারা উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় অভিযোগ দেন। এই অভিযোগই মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করার তথ্য জানালো পুলিশ।

সকালে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন মিডিয়ায়, টকশোতে বিভিন্ন ধরনের প্রচারপ্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে। বিষয়টি সাইবার সংক্রান্ত।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

অভিযোগকারী বলছেন, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

পাঁচ দিনের রিমান্ডে : উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় জেষ্ঠ সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। তদন্ত কর্মকর্তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই শামীম হোসেন রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মুনিরুজ্জামান তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, আনিস আলমগীর এক মাস আগে বেসরকারি টিভির এক টকশোতে মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের অপ্রকাশিত নেতারা সরকারকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। আসামি মেহের আফরোজ শাওন তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ বছরের ২৬ নভেম্বর লকার উদ্ধারের ঘটনায় কটাক্ষ করে সরকারবিরোধী পোস্ট দেন। তিনি বলেন, একেবারে তেলেসমাতি কারবার। আসামি ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লকার উদ্ধারকে ‘এটাই সায়েন্স’ বলে কটাক্ষ করে। এছাড়া এই চার আসামিসহ অন্য আসামি পরস্পর যোগসাজশে অন্যদের বিভিন্ন সময়ে তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল হতে বিভিন্ন প্রকার উসকানিমূলক পোস্ট ও বক্তব্য দিয়ে দেশের জননিরাপত্তা বিপন্ন করা, অন্য ব্যক্তিকে হত্যার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা এবং অন্য ব্যক্তিকে হত্যাগুরুতর জখম করার ষড়যন্ত্র ও সহায়তা করার জন্য প্ররোচিত করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসম্পাদক পরিষদের নিন্দা
পরবর্তী নিবন্ধবিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম জব্দ