শুষ্ক মৌসুমের আগেই কমছে কাপ্তাই হ্রদের পানি, সঙ্কটে বিদ্যুৎ উৎপাদন

কাপ্তাই প্রতিনিধি | রবিবার , ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

শুষ্ক মৌসুম শুরুর অনেক আগেই এবার কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমতে শুরু করেছে। রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী গতকাল শনিবার হ্রদে ১০৫ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল) পানি থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছে ৯৮ ফুটের কিছুটা বেশি। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে হ্রদের পানি কমতে থাকায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও সীমিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট সচল রাখার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে।

জানা যায়, কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মোট ৫টি ইউনিট রয়েছে। হ্রদে ১০৬ ফুট অথবা ১০৭ ফুট পানি থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবগুলো ইউনিট একযোগে চালু করা যায়। সব ইউনিট সচল থাকলে ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হবার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এই মুহুর্তে হ্রদের পানি দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ৫টির স্থলে একটি মাত্র ইউনিট সচল রেখেছেন।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান পানি হ্রাসের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে এখন পানি থাকার কথা ১৫০ ফুট এমএসএল। কিন্তু এখন পানি রয়েছে ৯৮ ফুটের কিছুটা বেশি। হ্রদে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমানে ১টি মাত্র ইউনিট সচল রাখা হয়েছে। কখনো ৪ আবার কখনো ৫ নম্বর ইউনিট চালু রেখে সেখান থেকে ৪২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুম পর্যন্ত কমপক্ষে একটি ইউনিট সচল রেখে কোনমতে বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যকে সামনে রেখে এখন ১টি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বছরের পর বছর পাহাড় ধসের মাটি পড়ে এবং পলি জমে কাপ্তাই হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে আছে। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই হ্রদের পানি উপচে পড়ার উপক্রম হয়। তখন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বাধ্য হয়ে পানি কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দিতে হয়। আবার শুষ্ক মৌসুম শুরু হবার অনেক আগেই হ্রদের পানি কমতে শুরু করে। এই অবস্থার সমাধানে কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই।

এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, হ্রদের কিছু অংশে ইতোপূর্বে ড্রেজিং করা হয়েছিল। তবে পুরো হ্রদ এলাকায় এলাকায় ড্রেজিং না করে শুধু একটি অংশে ড্রেজিং করলে খুব বেশি সফলতা পাওয়া যাবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ লেকে ড্রেজিংয়ের কাজ করার কথা বলেও তিনি জানান। পুরো হ্রদজুড়ে ড্রেজিং না করলে পানি সঙ্কটের এই অবস্থার অবসান হওয়া সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলে সোলার সেচ প্রকল্পের মোটর চুরি
পরবর্তী নিবন্ধইয়াবা নিয়ে কক্সবাজার থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম আসে দুই নারী