হৃদয়ে চট্টগ্রাম-হৃদয়ের যত্নে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন

ডা. প্রবীর কুমার দাশ | শনিবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম নৈসর্গিক সৌন্দয্যের লীলাভূমি। এখানে ভৌগলিকভাবে রয়েছে সবুজ পাহার আর নীল সাগরের অপূর্ব সমন্বয় ও সহাবস্থান। নীল সাগর আর সবুজ প্রকৃতি (পাহাড়, বাগান, মাঠ, পার্ক) দীর্ঘদিন ধরে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনাচরণের উপর প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। তা নিশ্চিত করে মানসিক চাপ ও বায়ু দূষণ মুক্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ। যা মানুষকে রোগমুক্ত দীর্ঘজীবন দান করে। ব্রিটিশ বায়োব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় এ ধরনের পরিবেশের অধিবাসীদের হৃদরোগের ঝুঁকি, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক চাপ, মেদবাহুল্য, ডায়াবেটিস অন্যদের তুলনায় কম। সমুদ্র উপকূলীয় অধিবাসীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। একইভাবে দেখা যায় ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের বাসিন্দাগণ কম হৃদরোগে ভোগে। তারা সামুদ্রিক মাছ, উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার স্বল্প পরিমাণে চর্বি বিহীন প্রাণীজ চর্বি, মৌসুমি ফলমুল, সবুজ শাকসবজি ও স্বল্প পরিমাণে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করে। রান্নায় তারা ব্যবহার করে জলপাই তেল। তাদের সবাই দুপুরের খাবারের পর কিছুক্ষণ ঘুমায়, যা মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই ধরনের খাদ্যভ্যাস ও জীবন যাত্রাই বহুল আলোচিত ‘ভূমধ্যসাগরীয় খাবার ও জীবনযাত্রা’ হিসাবে পরিচিত, যা হৃদরোগ প্রতিকার ও প্রতিরোধে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করে থাকে। সাগর আর পাহাড় বেষ্টিত চট্টগ্রাম ভৌগোলিকভাবে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকেও হৃৎবান্ধব হবার কথা। কারণ এখানে সাগরের সাথে রয়েছে সবুজ পাহাড়। চট্টগ্রাম বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি। চট্টগ্রামের অধিবাসীগণ একদা মানসিক চাপহীন, আয়েসী জীবনে অভ্যস্থ ছিল। এখানে পাওয়া যায় প্রচুর সামুদ্রিক মাছ যাতে রয়েছে হৃৎপিণ্ডের জন্য পরম উপকারী ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড। কিন্তু প্রথাগত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা থেকে এই অঞ্চলের মানুষ সরে এসেছে যুগের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে। এখানেই ঘটেছে বিপত্তি। এতে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। বিশ্বায়ন ও দ্রুত নগরায়ন খাদ্যাভ্যাস ও জীবন যাত্রায় পরিবর্তন এনেছে। সনাতনী খাদ্যাভ্যাস ছেড়ে বর্তমানে গৃহীত খাবার উচ্চ ক্যালরি, লবণ ও সম্পৃক্ত চর্বি সমৃদ্ধ। গৃহীত হচ্ছে ক্ষতিকারক ট্রান্সফ্যাট সমৃদ্ধ বিভিন্ন মচমচে ও মুখরোচক খাবার (যেমন চিপস, ফাস্টফুড ইত্যাদি)। রান্নায় ব্যবহৃত হচ্ছে পাম অয়েল, ডালডাসহ বিভিন্ন হৃদরোগ সৃষ্টিকারী তেল। দ্রুত নগরায়ন ও প্রতিযোগিতামূলক জীবনযাত্রা মানুষকে অলস করে তুলেছে। এতে বাড়ছে মেদবাহুল্য, পরিবেশ বিপর্যয়ে সৃষ্ট নগর সত্যতার দ্রুত দিচ্ছে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ যা হৃদরোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। লবণাক্ততা এই অঞ্চলে রক্তচাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। উল্লেখ্য, বিকাশজনিত এই ধরনের পরিবর্তনই একদা পশ্চিমা বিশ্বে হৃদরোগের উচ্চ প্রকোপের জন্য দায়ী হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। তবে তারা এই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছে। হৃদরোগ প্রতিরোধ জোরদার করেই তারা তা করেছে। এই বিষয়ে তাদের গবেষণালব্দ জ্ঞান এই পরিস্থিতির উত্তোরণে চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করছে। এক সময় পশ্চিমা বিশ্বে ধনীদের মধ্যে হৃদরোগের প্রকোপ বেশী ছিল। ধনাঢ্য ও শিক্ষিত সমাজের সদস্যগণ দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করে তা নিয়ন্ত্রণ করে এনেছে। পরবর্তীতে তা সমাজের মধ্য ও নিম্নবিত্তের মধ্যে উচ্চহারে দেখা দেয়। আমাদের দেশেও বর্তমানে একই চিত্র বিরাজমান। এখানে ও ধনীর অসুখ হিসাবে পরিচিতি পাওয়া হৃদরোগ আজ গরীব ও মধ্যবিত্তেরও অসুখ। এটা সচেতনতা তথা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলশ্রুতি। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির উত্তরণে কম্যুনিটিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।

ভৌগলিক পরিস্থিতি হৃৎবান্ধব হওয়া সত্ত্বেও চট্টগ্রাম অঞ্চলে হৃদরোগের উচ্চ প্রকোপের প্রধান কারণ এ অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস হিসাবে ধারণা করা হয়। খাদ্যভ্যাসের সাথে হৃদরোগের এই কারণগত সম্পর্ক বিজ্ঞানসম্মতভাবে পঞ্চাশের দশকে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। ফিনল্যান্ড হল্যান্ড, ইতালি, আমেরিকা, গ্রিস, জাপান এবং যুগোস্লাভিয়া এই সাত দেশ নিয়ে করা বিখ্যাত সাত দেশীয় এই সমীক্ষা। জীবনযাত্রা, পুষ্টি এবং হৃদরোগের পারস্পরিক সম্পর্ক উদঘাটন করেছে। এই গবেষণাই ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রাকে হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর বলে প্রমাণ করে। বর্তমানে তা আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক সর্বজনীনভাবে সুপারিশকৃত। খাদ্যের উপাদান ও তার পুষ্টিগত দিকের পাশাপাশি তার প্রস্তুত প্রণালী, সংরক্ষণ ও পরিবেশন হৃদরোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। বলা বাহুল্য তা অধিকাংশ খাবারকে মুখরোচক করতে ও রসনা তৃপ্তিতে করা হয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ, সামুদ্রিক মাছকে অতিমাত্রাই ফ্রাই করলে তার ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড নষ্ট হয়ে যায়, সৃষ্টি হয় মারাত্মক হৃদরোগ সৃষ্টিকারী ট্রান্সফ্যাট। মাছকে মুখরোচক শুটকি করে গ্রহণ করলেও উপকারী এই ফ্যাটি এসিড নষ্ট হয়। মাংসের আনুষঙ্গিক উপাদান যেমন গিলা কলিজা, নলা, উচ্চ কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ। বস্তুত কোলেস্টেরলের মাত্রার সাতে এই সব খাবারের স্বাদ সরাসরি সম্পর্কিত। এছাড়া পোড়া তেলে ভাজা খাবার অতিরিক্ত ভেজে, পাতা করে তৈরি ভুনা (কালো ভুনা হিসাবে বহুল পরিচিত) ইত্যাদি খাবারে সৃষ্ট হয় ট্রান্সফ্যাট যা সরাসরি হৃদরোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতির এই ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তা ৩০ শতাংশের নীচে কমিয়ে আনতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। তাই এ ব্যাপারে জনসচেতনতা জরুরি। হৃদরোগ সৃষ্টিকারী খাবার গ্রহণের পাশাপাশি এখানে হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী খাবার যেমন ফলমূল, সবজি গৃহীত হয় প্রয়োজনের তুলনায় কম। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ মতে দৈনিক ৪০০ গ্রাম (দিনে ৪০ গ্রাম করে ৪বার) ফল ও সবজি গ্রহণ আবশ্যক। তবে এতে আলু ও অন্যান্য, শর্করাসমৃদ্ধ সবজি অন্তর্ভুক্ত নয়। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এখন প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন হয়। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, ফলমূল ও শাকসবজিতে কোলেস্টেরল থাকে না। এতে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এভাবে তা জীবন রক্ষাকারী খাদ্যাভ্যাসে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি হৃদরোগ সৃষ্টিকারী অন্যান্য উপাদানগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। ধূমপান বর্জন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, শরীরের প্রত্যাশিত ওজন বজায় রাখা ও নিয়মিত ব্যায়াম আবশ্যক। চট্টগ্রাম অঞ্চলে হৃদরোগের উচ্চ প্রকোপ সত্ত্বেও তার প্রতিকার প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখানে নিতান্ত অপ্রতুল। সরকারি পর্যায়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ। এই বিভাগের উপর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কঙবাজার ছাড়াও ফেনী, কুমিল্লার দক্ষিণাংশ, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও বি. বাড়িয়ার একাংশের বিশাল জনগোষ্ঠী নির্ভরশীল। এই বিশাল এলাকার প্রায় ৪ কোটি মানুষের সরকারি পর্যায়ে হৃদরোগ সেবাপ্রাপ্তির একমাত্র স্থান এইটা। তার পাশাপাশি কিছু বিশেষায়িত ক্লিনিক রয়েছে যার অধিকাংশে চিকিৎসকসহ পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ সুবিধা অনুপস্থিত, হার্ট অ্যাটাকের অন্তত এক তৃতীয়াংশ রোগী হঠাৎ মৃত্যুবরণ করে। তারা হাসপাতালের সিসিইউ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই ভবলীলা সাঙ্গ হয়। আরো এক তৃতীয়াংশ অবস্থানগত ও অন্যান্য বিভিন্ন কারণে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে না। তাই অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাকের রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে পারে না। তাদের হার্ট অ্যাটাকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হলে প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। হৃদরোগের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান যেমন ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তের উচ্চ কোলেস্টেরল, মেদ বাহুল্য প্রতিরোধ ও তার উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হৃদরোগ তথা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে হৃদরোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি হৃদরোগে আক্রান্তদের উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে হৃদরোগের মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতিরোধ জরুরি। সামর্থবান হৃদরোগীদের কেউ কেউ চট্টগ্রামের বাইরে রাজধানী ঢাকায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কিংবা অন্যান্য উন্নত দেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে দেখা যায়। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর তুলনায় তা নিতান্ত নগন্য। আবার হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগের অন্যান্য জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা আবশ্যক। এখানে কালক্ষেপণে মৃত্যু ডেকে আনে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব নয়। তাই চট্টগ্রামে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং তার উন্নয়নের বিকল্প নেই। এই ধরনের প্রেক্ষাপটে ও বাস্তবতায় চট্টগ্রামে হৃদরোগ সেবা প্রদানের মহানব্রত নিয়ে নিম্ন বর্ণিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে গত ২৫ মে, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন আত্মপ্রকাশ করেছে।

*সম্ভাব্য স্বল্পব্যয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে উন্নত ও মানসম্মত হৃদরোগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।

*ক্রমবর্ধমান হৃদরোগ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা ও তার প্রতিরোধে এ অঞ্চল তথা বাংলাদেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।

*চট্টগ্রাম অঞ্চলের হৃদরোগের প্রকোপ বিষয়ক গবেষণা, হৃদরোগীদের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা ও প্রকাশনা।

*সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নিজস্ব জায়গায় সিসিইউ, ক্যাথল্যাব, আইসিইউ, আপরেশন থিয়েটার ও অন্যান্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ৫০০ বেডের হৃদরোগ হাসপাতাল স্থাপন।

*দরিদ্র ও অসহায় হৃদরোগীদের বিনামূল্যে হৃদরোগের পরীক্ষা, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

*কর্মরত চিকিৎসা ও নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের পেশাগত মান উন্নয়ন।

*জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন হৃদরোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে সমঝোতা স্মারক তৈরি এবং অন্যান্যভাবে সহযোগিতার ক্ষেত্র সৃষ্টি।

*দেশে ক্রমবর্ধমান নার্সিং সেবার অপ্রতুলতা নিরসনে নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা।

*পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান পূর্বক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও হৃদরোগ চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি এবং জাতিসংঘ ঘোষিত ‘২৫২৫’ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা প্রদান।

উপরোক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নে আজ চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হচ্ছে। সেখানে থাকবে সিসিইউ, ক্যাথল্যব, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটারসহ ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ আধুনিক হৃদরোগ হাসপাতাল। পরবর্তীতে তা হৃদরোগ ইনিস্টিটিউটে রূপ নেবে। নিজস্ব জায়গায় নির্মাণ কাজ শুরু হলে প্রাইভেটপাবলিকপাটনারশিপ (পিপিপি) এর আওতায় ৮০:২০ অনুপাতে সরকারি সহায়তা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। ইতিমধ্যে নগরীর ও আর নিজাম রোডস্থ প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী কার্যালয়ে সিসিইউ ও বহির্বিভাগ সেবা চলমান রয়েছে। সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের যে স্বপ্ন চট্টগ্রামবাসী এতদিন দেখে এসেছে তা বাস্তব রূপ পরিগ্রহ করার আজ মহেন্দ্রক্ষণ। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ঐকান্তিকতা ও সানুগ্রহে সাগরিকায় চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য প্রদত্ত ভূমিতে মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। বলাবাহুল্য এটাই হতে যাচ্ছে সরকারি পর্যায়ে নির্মিতব্য চট্টগ্রামের প্রথম বিশেষায়িত হাসপাতাল। এই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য, একুশে পদক প্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকসহ চট্টগ্রামপ্রেমী বিভিন্ন স্তরের দানশীল ব্যক্তিগণ উপস্থিত থেকে ইতিহাসের এই মহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখবেন। হৃদয়ে চট্টগ্রামকে ধারণ করে চট্টগ্রামবাসী তথা দেশের মানুষের হৃৎ সুস্থতায় তারা ভূমিকা রাখবেনএই প্রত্যাশা।

লেখক : মহাসচিব, চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, হৃদরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকটি বাতিঘর ঘিরেই খুলছে পর্যটনের দুয়ার
পরবর্তী নিবন্ধবুরহানী বিএসআরএম উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘হ্যাপি স্ট্রিট’ উৎসব