আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের সাত ক্রিকেটার

চূড়ান্ত তালিকায় নেই সাকিব

স্পোর্টস ডেস্ক | বুধবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আইপিএল নিলামের প্রাথমিক তালিকায় থাকলেও চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা হয়নি সাকিব আল হাসানের। চূড়ান্ত তালিকায় প্রত্যাশিতভাবেই আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ থেকে এই তালিকায় আছেন আরও ছয় ক্রিকেটার। মোস্তাফিজের সঙ্গে চূড়ান্ত তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, নাহিদ রানা, রকিবুল হাসান ও শরিফুল ইসলাম। সবচেয়ে চমক জাগানিয়া নামটি নিঃসন্দেহে রকিবুল। ২০২০ অনূধর্ব১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাঁহাতি স্পিনার এখনও বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। তিনটি আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টি অবশ্য তিনি খেলেছেন ২০২৩ এশিয়ান গেমসে, তবে সেখানে জাতীয় দল খেলেনি। যুব পর্যায়ের পর দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে রকিবুল নিয়মিতই খেলছেন। ইমার্জিং দল, হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াড ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলেও তার উপস্থিতি নিয়মিত। পারফর্মও করছেন ধারাবাহিকভাবে। বিপিএলে তার রেকর্ড অবশ্য খুব উজ্জ্বল নয়। সেখানে ২২ ম্যাচ খেলে তার উইকেট ১৬টি। গত বিপিএলে ৯ ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন ওভারপ্রতি সাড়ে আটের বেশি রান দিয়ে।

সব মিলিয়ে ৬৯ টিটোয়েন্টিতে ৬৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি ওভারপ্রতি ৬.৯০ রান দিয়ে। দেশের বাইরের লিগে খেলার কোনো অভিজ্ঞতা তার নেই। আইপিএল নিলামের প্রাথমিক তালিকায় নাম লেখাতে পারেন যোগ্য যে কোনো ক্রিকেটারই। এরপর দলগুলির আগ্রহের তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হয় এই চূড়ান্ত তালিকা। এবার যেমন প্রাথমিক তালিকায় নিবন্ধন করেছিলেন ১ হাজার ৩৯০ জন ক্রিকেটার। সেখান থেকে চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা হয়েছে স্রেফ ৩৫০ জনের।

রকিবুলের এই তালিকায় থাকা তাই বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। চূড়ান্ত তালিকার ৩৫০ জনের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেটার ২৪০ জন, বিদেশি ১১০ জন। এই ৩৫০ জনের মধ্যে নিলামে দল পাবেন সর্বোচ্চ ৭৭ ক্রিকেটার। বিদেশি ক্রিকেটারের জায়গা ফাঁকা আছে ৩১টি। ভারতীয় ২৪০ ক্রিকেটারের মধ্যে ২২৪ জনই আনক্যাপড। আনক্যাপড বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে রকিবুলসহ মাত্র ১৪ জন আছেন তালিকায়।

কখনও জাতীয় দলে না খেলা ক্রিকেটার, সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার পাঁচ বছর পেরিয়ে যাওয়া ক্রিকেটার বা পাঁচ বছর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকা ক্রিকেটারদের গণ্য করা হয় আনক্যাপড হিসেবে। মোস্তাফিজ নিজেকে নিলামে রেখেছেন সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে, যেখানে পারিশ্রমিক ২ কোটি রুপি। এই ক্যাটাগরিতে আছেন মোট ৪০ ক্রিকেটার। আইপিএলে আট মৌসুম খেলেছেন মোস্তাফিজ। গত আসরের আগে মেগা নিলামে তিনি দল না পেলেও পরে জেইক ফ্রেজারম্যাকগার্কের বদলি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। তিন ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছিলেন চারটি। আগের আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছিলেন ১৪টি।

সব মিলিয়ে আইপিএলে ৬০ ম্যাচ খেলে ৬৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি ওভারপ্রতি ৮.১৩ রান দিয়ে। ৩০ বছর বয়সী পেসার এখন খেলছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টিটোয়েন্টিতে। সেখানে প্রথম দুই ম্যাচেই দারুণ বোলিং করেছেন। এই বছর জাতীয় দল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তার যেমন পারফরম্যান্স, তাতে নিলামে তার প্রতি আগ্রহ থাকার কথা দলগুলির। অবশ্য ফাস্ট বোলারদের দ্বিতীয় সেটে আছে তার নাম। প্রথম সেটে থাকলে দল পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকত। ৭৫ লাখ রুপি ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে আছেন তাসকিন, রিশাদ, তানজিম, শরিফুল ও নাহিদ। বিগ ব্যাশে খেলতে যাওয়া রিশাদ আছেন স্পিন বোলারদের দ্বিতীয় সেটে। ফাস্ট বোলারদের তৃতীয় সেটে আছেন তাসকিন, চতুর্থ সেটে তানজিম ও নাহিদ ও পঞ্চম সেটে আছেন শরিফুল। আনক্যাপড স্পিনারদের চতুর্থ সেটে আছেন রকিবুল, ভিত্তিমূল্য ৩০ লাখ রুপি।

মোস্তাফিজ ছাড়া অন্য কারও দল পাওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা খুবই সামান্য। তিনি ও রিশাদ ছাড়া অন্য কারও নামই হয়তো নিলামে উঠবে না, তাদের নাম ওঠার আগেই শেষ হয়ে যাবে দলগুলির কোটা। এবারের আইপিএলের নিলাম হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর, আবু ধাবিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ দল
পরবর্তী নিবন্ধশিরোনামহীনের দুই গানের অনুবাদের গল্প