ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয়ে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরি করছে এনবিআর

করদাতাদের বার্ষিক রিটার্ন দাখিল

| বুধবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৮:০১ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, করদাতাদের যেন বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা থেকে একাধিক ব্যাংক সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে না হয়, সেজন্য এনবিআর একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম তৈরি করছে। এটি বার্ষিক রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়াকে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা তাদের ট্যাক্সপেয়ার আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর প্রবেশ করালেই সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে। সংগ্রহ করা তথ্যের মধ্যে থাকবে৩০ জুন পর্যন্ত ব্যালেন্স, বছরে মোট অর্জিত মুনাফা, সেই মুনাফার ওপর উৎসে কর কর্তনের পরিমাণ এবং একই সময়ে ব্যাংকের আরোপিত চার্জ। তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব করদাতার একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাদের প্রত্যেক ব্যাংকে গিয়ে এসব সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়, যা প্রায়ই ভুল হয় এবং অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, এই তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংগ্রহ করা হলে করদাতাদের আর এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে দৌড়াতে হবে না এবং জমাকৃত তথ্যের ভুলত্রুটি দূর হবে। খবর বাসসের।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সিস্টেমটি নিয়ে ব্যাপক ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেন, এনবিআর কোনোভাবেই করদাতার ব্যক্তিগত বা লেনদেনসম্পর্কিত তথ্যের অ্যাক্সেস পাবে না। তিনি বলেন, রিটার্ন দাখিলের সময় শুধু করদাতারাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেট হওয়া ব্যাংক তথ্য দেখতে পারবেন এবং কোন ট্যাক্স কর্মকর্তা এ তথ্য দেখতে পাবেন না। তিনি আরও বলেন, সিস্টেমের মাধ্যমে কোনো লেনদেনস্তরের তথ্য সংগ্রহ করা হবে না। বিশদ ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চাওয়া হলে তা বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তদন্তের ক্ষেত্রে যথাযথ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আগের মতোই আলাদা প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে।

আবদুর রহমান খান বলেন, নতুন এ ব্যবস্থা ব্যাংকসম্পর্কিত ঘোষণার অসঙ্গতির কারণে ফাইল পুনরায় খোলার মতো অপ্রয়োজনীয় জটিলতা রোধ করবে। উদ্যোগটি ভালোভাবে এগিয়ে চললেও এটি এই বছর চালু করা সম্ভব হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এনবিআরের নিজস্ব আইটি টিমকে শক্তিশালী করে সব ব্যাংকের ডিজিটাল সিস্টেমের সঙ্গে নিরাপদ সংযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পর আগামী অর্থবছরের আগেই এ সিস্টেমটি চালু করা সম্ভব হবে।

এ ব্যবস্থা সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে এবং জনগণের আস্থা তৈরিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সঠিক তথ্য প্রচারে গণমাধ্যমের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সিস্টেমটি চালু হলে স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়বে এবং স্বাভাবিকভাবে রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। এনবিআর চেয়ারম্যান পুনর্ব্যক্ত করেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়াকে সহজ করা, করদাতাদের ঝামেলা কমানো এবং দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় কর প্রশাসন গড়ে তোলা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুচ্ছভুক্ত ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন শুরু আজ
পরবর্তী নিবন্ধঅ্যাডভোকেট এ বি এম ফজলে রশীদ চৌধুরী হিরুর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ