বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ অধীনে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত, প্যাকিং ও রপ্তানি হাউস স্থাপন করতে যাচ্ছে। নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে হর্টিকালচার সেন্টারের পাশে নিজম্ব জমিতে আগামী জানুয়ারি থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানান এই প্রকল্পের ফোকালপার্সন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকাস্থ খামার বাড়ির উপ–পরিচালক কৃষিবিদ মো. জুলফিকার আলী। তিনি জানান, ২৫৬ কোটি টাকার ‘চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পটি গত সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছে।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আজাদীকে জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর এবং শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র রয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব কৃষিজাত পণ্য দেশে আসে (আমদানি করা হয়) এবং যে পণ্য কৃষিজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়–এসব পণ্য পরীক্ষা করা হয় (যা খাওয়ার উপযোগী কিনা পরীক্ষা করা হয়) এই ‘উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রে’। এই প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ স্টেশনটি নতুন করে স্থাপন করা হবে। এছাড়াও এ প্রকল্পের অধীনে কঙবাজার রামুতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ৪র্থ তলা অফিস কাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ভবন নির্মাণ এবং আগ্রাবাদে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ–পরিচালকের বাসভবন নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পের ফোকালপার্সন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকাস্থ খামার বাড়ির উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. জুলফিকার আলী গতকাল আজাদীকে জানান, ‘চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ অধীনে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রথমবারের মতো কৃষি পণ্য (ফলমূল–সবজি সহ যাবতীয় কৃষি পণ্য) প্রক্রিয়াজাত, প্যাকিং ও রপ্তানি হাউস স্থাপন করা হবে। নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিজস্ব জমিতে প্রকল্পের প্রক্রিয়াজাতকরণ হাউস স্থাপন করা হবে। ২৫৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি আগামী ৫ বছরের মধ্যে (২০২৬ সালের আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর ২০৩০ সাল) বাস্তবায়িত হবে।
এই প্রকল্পের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত যাবতীয় কৃষিপণ্য ও সকল ধরনের উৎপাদিত ফলমূল এই কারখানায় প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হবে। এর ফলে কৃষকের উৎপাদিত কোন পণ্য আর প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে আর নষ্ট হবে না। এই কারখানায় রপ্তানিমুখী সকল কৃষিপণ্য–বিশেষ করে নানান ধরনের সবজি বিদেশে রপ্তানির জন্য উন্নতমানের প্যাকিং হবে।
প্রকল্পের ফোকালপার্সন কৃষিবিদ মো. জুলফিকার আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ রকম কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ হাউস না থাকার কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নির্দিষ্ট সময়ের পর পচে নষ্ট হয়ে যেত। এ কারণে কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পেত না, ক্ষতির সম্মুখিন হতো। প্রকল্পের অধীনে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকিং ও রপ্তানি হাউস স্থাপনের মধ্যদিয়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যে ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং উন্নত প্রযুক্তিতে প্যাকিংসহ রপ্তানি করতে পারবেন। এর ফলে এই অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হবেন। এটা চট্টগ্রাম অঞ্চলের কৃষকদের জন্য অনেক খুশির খবর।












