ছুটির দিন শুক্রবারের শান্ত সকালটা এক ঝটকায় কেমন যেন পাল্টে গেল। আড়মোড়া ভাঙার অলসতা মুহূর্তেই চূর্ণ হয়ে গেল ভূমিকম্পনের তীব্রতায়। ভূমিকম্পে যখন কেঁপে ওঠে গোটা দেশ, মিরপুর শের–ই–বাংলা স্টেডিয়ামে তখন ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ দল। খেলা বন্ধ হয়ে যায় কিছুক্ষণের জন্য। দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে তাইজুল ইসলাম প্রথমে বললেন, শুরুতে তারাও বুঝে উঠতে পারেননি। পরে ভূমিকম্প হচ্ছে বুঝতে পেরে একটু অস্থির হয়ে পড়েন তারা।
মিরপুর টেস্টের তৃতীয় সকালে আয়ারল্যান্ড ইনিংসের ৫৬তম ওভারে তৃতীয় ডেলিভারিটি করত যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ঠিক সেই মুহূর্তে হঠাৎ কেঁপে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। ক্রিকেটাররা থেমে দাঁড়ান, পরস্পরের দিকে তাকাতে লাগলেন। ডাগআউটের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরাও উঠে দাঁড়ান। খেলা বন্ধ থাকে তখন তিন মিনিটের মতো। দেশজুড়ে ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্কের রেশ। তবে মাঠে তো খেলা বেশিক্ষণ বন্ধ রাখা যায় না। সবাই একটু ধাতস্থ হওয়ার পর আবার খেলা শুরু হয়। দিনের খেলা শেষে তাইজুল জানাচ্ছিলেন তাদের সেই সময়ের অনুভূতি। ‘আসলে প্রথমে বুঝিনি ভূমিকম্প। কিন্তু একটা সময় সম্ভবত মিডিয়া বক্স যে জায়গা থেকে, সেদিক থেকে একটা আওয়াজ আসছিল। ওই একটা শব্দ এসেছে। তারপরে শারীরিকভাবেও অনুভব করেছি। ওই সময়ে একটা আতঙ্ক কাজ করছিল।’ বাংলাদেশ ফিল্ডিংয়ে থাকায় অন্য সবার মতো ভূমিকম্পের অনুভূতিটা তাদের সেভাবে হয়তো ছুঁয়ে যায়নি। আয়ারল্যান্ড দলের ব্যাটিং চলছিল, তাই দুই ব্যাটার বাদে বাকি সদস্যদের উপস্থিতি ছিল কারও ডাগ আউটে, কারও বা ড্রেসিংরুমে।
দিনশেষে আইরিশ প্রতিনিধি হাইনরিখ মালানের কাছে প্রশ্ন গেল সকালের ভূমিকম্প নিয়ে। পূর্ব অভিজ্ঞতায় নতুন ভূমিকম্পের অনুভবটা জানিয়ে দিলেন প্রধান কোচ। ‘আমি ব্যাক্তিগতভাবে কিছু ভূমিকম্পের ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। নিউজিল্যান্ডে কিছুদিন থেকেছি আমি। এটা কখনওই ভালো অনুভূতি নয়। এখানেও তা–ই।’‘ওই সময়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম কী হচ্ছে। পাশাপাশি বৃহত্তর ছবিটাও মনে ভাসছিল যে, কোথায় ভূমিকম্পটা আঘাত করল, সেটার ক্ষতি যেন খুব বেশি না হয়, এই আশা করছিলাম। কয়েক মিনিটের জন্য যেন সব থমকে গিয়েছিল। তারপর আবার আমরা খেলায় ফিরেছি। এখন ভাবনা একটাই, যেন কোথাও বড় ধরনের ক্ষতি না হয়ে থাকে।’












