মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

| বৃহস্পতিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম ও ফার্মাসিস্টদের মানববন্ধন গতকাল ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরাম (এম টি এফ)-এর উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এম টি এফ সংগঠনের সভাপতি মো. তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সেক্রেটারি ড. জাকির হোসেন, বারিটের সিনিয়র টেকনোলোজিস্ট নূর মোহাম্মদ, মো. লিয়াকত হোসেন, মো. মাহমুদ হাসান, মো. আনসার আলী। উপস্থিত ছিলেন মো. তৌহিদ হাসান, মো. আজিজুর রহমান, মো. নাজমুস সাকিব, এবং ছাত্র প্রতিনিধি মো. সিয়াম ও শামীম প্রমুখ।

এম টি এফএর সভাপতি মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই যদি আমদের টেকনোলজিস্টদের দাবি মেনে না নেন, তাহলে অনতিবিলম্বে কর্মবিরতি দিতে বাধ্য হবো। আর আমরা একদিন কর্মবিরতিতে গেলে দেশের চিকিৎসা খাতে ব্যাপক ক্ষতি হবে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হবে এবং এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হবে। স্বাস্থখ্যাতে অবহেলিত জাতি হলাম আমরা টেকনোলজিস্টরা। আমাদের দ্রুত ১০ম গ্রেড উন্নীত করুন। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে এই সেক্টরে দুর্নীতি কমবে না। সকল দুর্নীতি বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবাকে উন্নত করুন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডিপ্লোমা ও বিএসসি যারা তাদের মাধ্যমে সেম্পল কালেকশন, প্যাথলজিক্যাল টেস্ট, এক্সরে, সিটিস্ক্যান, এমআরআই ও ফার্মেসী বিভাগগুলোতে কিছু ননডিপ্লোমা বা অপশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান দ্বারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে। তাদের অপচিকিৎসার কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তাতে সাধারণ মানুষ আমাদের মাবাবা, ভাইবোন ও স্বজনরা নিয়মিত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা মাঠে নেমে তাদের মৌলিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। করোনা মহামারী, প্রতিবছর ডেঙ্গু, নিপাহ ভাইরাসসহ বিভিন্ন মহামারিতে জনগণের জীবন বাঁচাতে তারা সবসময় সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। অথচ আজও তারা ন্যায্য ১০ম গ্রেড থেকে বঞ্চিত, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বৈষম্যমূলক।

বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকার যদি অন্যান্য ডিপ্লোমাধারী সমযোগ্যতাসম্পন্ন পেশাজীবীদের ১০ম গ্রেড দিতে পারে, তবে স্বাস্থ্যব্যবস্থার মেরুদণ্ড এই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের বছরের পর বছর কেন বঞ্চিত রাখা হচ্ছে? কেন তাদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন হচ্ছে না? গত বছর বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সারা দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের ও তারপর পেশাজীবী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের উদ্যোগে ফাইল ওয়ার্কিংএর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ঘোষণা দিয়েছিলেন যে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

বক্তারা আরও বলেন, এই আশ্বাসের প্রতি সম্মান রেখেই এতদিন আমরা কোনো কর্মবিরতি কিংবা কঠোর আন্দোলনে যাইনি। কিন্তু এটাই আমাদের শেষ ধৈর্য। আর কোনো আশ্বাস নয়, সরাসরি সিদ্ধান্ত চাই, মানববন্ধনে তীব্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বক্তারা বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যদি ১০ম গ্রেড বিষয়ে নতুন করে ফাইল ওয়ার্কিং বা কোয়ারীর নামে কোন নাটক সৃষ্টি করে, তাহলে সারাদেশের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন।

বক্তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা অচল হলে এর দায়ভার পুরোপুরি সরকারের। আমরা আর কোনো অজুহাত বা আশ্বাস গ্রহণ করব নাএবার চাই কেবল লিখিত সিদ্ধান্ত। জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থা সচল রাখতে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের প্রতি ন্যায্য দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জোর আহ্বান জানান তারা। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচরকানাইয়ে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
পরবর্তী নিবন্ধমো. নুরুল আলম