মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে জামদানি ও শাপলাকে তুলে ধরলেন মিথিলা

কার মাথায় উঠছে বিজয়ের মুকুট জানা যাবে কাল

| বৃহস্পতিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

থাইল্যান্ডে জমকালো আয়োজনে চলছে মিস ইউনিভার্স ২০২৫এর ৭৪তম আসর। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আছেন তানজিয়া জামান মিথিলা। আগামীকাল (২১ নভেম্বর) জানা যাবে কার মাথায় উঠবে কাঙ্ক্ষিত মুকুট। তার আগে প্রতিযোগীরা অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সেশনে, যার অন্যতম হলো জাতীয় পোশাক প্রদর্শন বা ন্যাশনাল কস্টিউম রাউন্ড। গতকাল বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। এরই মধ্যে মিথিলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তার ন্যাশনাল কস্টিউম লুকের ছবি যা ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনা।

ন্যাশনাল কস্টিউম হিসেবে মিথিলা বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের নারীদের চিরায়ত পোশাকশাড়ি, আর সেই শাড়ির জন্যই নির্বাচন করেছেন সম্মান ও ঐতিহ্যের প্রতীক সাদা জামদানি। মিথিলার পরা এই জামদানিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলার মোটিফ, যা শান্তি, পবিত্রতা ও বাঙালি নারীর দৃঢ়তার প্রতীক। ছবিটি পোস্ট করার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রশংসায় ভাসছেন মিথিলা। স্যোশাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে মিথিলা লিখেছেন, মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশের ন্যাশনাল কস্টিউম– ‘দ্য কুইন অব বেঙ্গল’। মিথিলা তার পোস্টে আরও লিখেছেন, মিস ইউনিভার্স মঞ্চে বাংলাদেশের ন্যাশনাল কস্টিউম হিসেবে যে জাঁকজমকপূর্ণ জামদানি শাড়িটি পরা হয়েছে, তা দেশের রাজকীয় ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। একসময় মোগল সম্রাট, নবাব এবং বাংলার অভিজাত নারীদের জন্য বোনা হতো এই জামদানি যার প্রতিটি সুতা বহন করে ইতিহাস, শিল্প, নিবেদন এবং চিরায়ত সৌন্দর্যের গল্প।

মিথিলা তার শাড়ি প্রসঙ্গে আরও বলেন, এই বিশেষ জামদানি শাড়িতে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলার নকশা। যেটা শান্তি, পবিত্রতা এবং এই মাটির অদম্য শক্তির প্রতীক। পুরোপুরি হাতে বোনা শাড়িটি সম্পূর্ণ তৈরি হতে সময় লেগেছে প্রায় ১২০ দিন।

শাড়ির পাশাপাশি নজর কেড়েছে মিথিলার বিশেষভাবে তৈরি জুয়েলারি ব্লাউজ এবং গয়নাগুলোও। তার গয়না ও ব্লাউজে শাপলা ছিল দৃশ্যমান। সোনালি গয়নায় তুলে ধরা হয়েছে বাংলার অনুগ্রহ, দৃঢ়তা ও রাজকীয় ঐতিহ্যের দীপ্তি। মিথিলা জানান, তার কস্টিউমের প্রতিটি সুতা, প্রতিটি অলংকার বয়ে এনেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের গল্প জামদানির রাজকীয় অতীত, শাপলার শান্ত সৌন্দর্য এবং বাঙালি সংস্কৃতির শক্তি।

বিজয়ী হলে যা পাবেন : বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও সর্বাধিক দেখা এই বিউটি প্যাজেন্টের বার্ষিক বাজেট প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার। যদি তানজিয়া জামান মিথিলা বা কোনো প্রতিযোগী এই আসরে বিজয়ী হন, তবে তার জীবনযাত্রা আমূল বদলে যাবে। মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন বিজয়ীর জন্য রাজকীয় সব সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করে থাকে।

মিস ইউনিভার্স আসরের বিজয়ী ৫.৫ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬৬ কোটি টাকা) মূল্যের একটি হীরাখচিত মুকুট পরার সুযোগ পাবেন। ‘ফোর্স ফর গুড’ নামের এই মুকুটটি প্রায় এক হাজার হীরা এবং নীলকান্তমণি দিয়ে সজ্জিত। মিস ইউনিভার্সকে এক বছরের বেতন হিসেবে নগদ আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ কোটিরও বেশি।

বিজয়ী এক বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকার সুযোগ পান। যুক্তরাষ্ট্রের মিস ইউনিভার্স বিজয়ীরা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগও পেয়ে থাকেন। পরবর্তী এক বছর বিজয়ীর খাওয়া, পোশাক, প্রসাধনসামগ্রী, বাজার করা বা রান্নাবান্নাকোনো কিছু নিয়েই চিন্তা করতে হয় না। এই সব খরচ বহন করে কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভ্রমণের জন্য বিজয়ীকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ (প্রাইভেট জেট) দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারেন। প্রতিটি সফরের হোটেল খরচ, খাওয়া, ফটোশুট বা প্রেস মিটিংয়ের সমস্ত আয়োজন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ।

বিজয়ীকে মিস ইউনিভার্সের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাতব্য কাজে অংশ নিতে হয়। এর বাইরে তিনি কোনো কনসার্ট, ফ্যাশন শো, অ্যাওয়ার্ড শো বা পার্টিতে যেতে চাইলে কর্তৃপক্ষ ভিআইপি প্রটোকলে সব ব্যবস্থা করে দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে আজ থেকে ৩৬ ঘণ্টার হরতাল আহ্বান
পরবর্তী নিবন্ধআসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে,৭ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ