চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেটে বহিরাগতদের চাঁদাবাজি, হামলা ও মারধরের প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে ট্রাক কাভার্ডভ্যান চালকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা থেকে নগরীর নিমতলা মোড়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ পণ্য পরিবহনকারী বিভিন্ন যানবাহন রেখে সড়কে ব্যারিকেড তৈরি করেন শ্রমিকরা। তবে পুলিশ ও বন্দর কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পর বিকেল ৫টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে যান। অবরোধের কারণে ব্যস্ততম নিমতলা মোড় ও আশপাশের সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
বন্দর ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন গেটে বহিরাগতরা প্রতিটি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান থেকে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা আদায় করছে। যা দিতে নারাজ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালকরা। কারণ এ অতিরিক্ত টাকা তারা মালিক থেকে নিতে পারেন না। চালকেরা জানান, চাঁদা না দেওয়ায় বুধবার সকালে প্রথমে কয়েকজন শ্রমিককে বহিরাগতরা মারধর করে। এ খবর পাওয়ার পর আমরা দুপুরে বন্দরের ২ নম্বর গেটের সামনে যাই। তখন বহিরাগতরা সবাই একজোট হয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছিলাম।
চট্টগ্রাম ট্রাক–কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের গেটে আমাদের আটকে জোর করে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করার পর সিকিউরিটি অফিসার আমাদের বলেছেন– বন্দরের নির্ধারিত গেট ফি ৫৭ টাকা ৫০ পয়সার ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিতে। টাকা না দেওয়ায় আমাদের শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে। তাই সড়কে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ ও বন্দরের কর্মকর্তাদের আশ্বাস পেয়ে ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকরা আরও জানান, একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের কর্মী পরিচয় দিয়ে ফকিরহাট, গোসাইলডাঙা, মাদারবাড়ি দুই নম্বর গলিরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু যুবক একেক গ্রুপ বন্দরের একেক গেইট নিয়ন্ত্রণ করে। বন্দরে ঢোকার সময় গাড়ি আটকে টাকা দিতে বাধ্য করে। ১০০ বা ১৫০ টাকার মতো নেয়, সেখান থেকে গাড়ির গেইট–ফি বাবদ ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা বন্দরের ডেস্কে জমা দিয়ে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ–বাটোয়ারা করে নেয়।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা আহমেদ বলেন, পরিবহন শ্রমিকেরা ঘন্টাখানেক রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিলেন। বন্দরের গেটে অবৈধভাবে বহিরাগত লোকজনের টাকা আদায় সংক্রান্ত কিছু অভিযোগও তারা করেছেন। আমরা তাদের থানায় আসতে বলেছি। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত অভিযোগ শুনে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।












