ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধনের পর আজ বুধবার থেকে নিবন্ধন শুরু হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া দেশের ভেতর তিন ধরনের ব্যক্তিদের নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। এ সময় বাদ পড়া প্রবাসীরাও নিবন্ধন করতে পারবেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন অ্যাপটি উদ্বোধন করার পর নিবন্ধনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। নমুনা হিসেবে মিশর, জাপান, আরব আমিরাত, কেনিয়া ও নেদারল্যান্ডস থেকে একজন করে প্রবাসীকে নিবন্ধ করতে দেখা যায়। পোস্টাল ভোটিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
এ সময় যারা সেখানে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ইতিহাসের সাক্ষী হলেন। বাংলাদেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করল। সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলেন আপনারা। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষাধিক মানুষ বিদেশে বসবাস করছে এবং বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছে। এতদিন এই বিদেশে থাকা নাগরিকরা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। আজকের এই উদ্যোগ সেই বঞ্চনার অবসান ঘটাচ্ছে।
‘আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি–এসডিআই)’ প্রকল্পের টিম লিডার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালীম আহমাদ খান বলেন, ১৯ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর নিবন্ধন করতে পারবেন পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলের ৫২টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা।
১. ২৪ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে উত্তর আমেরিকার ১৪টি দেশ ও ওশেনিয়া অঞ্চলের দুটি দেশে নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। ২. ইউরোপের ৪২টি দেশে নিবন্ধন করতে হবে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। ৩. ৪ ডিসেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে নিবন্ধন শুরু হয়ে চলবে ৮ ডিসেম্বর। ৪. দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশ, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করতে পারবেন ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। ৫. আর মধ্যপ্রাচ্যের (সৌদি আরব ছাড়া) বাকি ১৪টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের নিবন্ধন করতে হবে ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে।
প্রকল্পের টিম লিডার বলেন, বাংলাদেশের ভেতরে যারা পোস্টাল ভোটিংয়ে অংশ নেবেন তাদের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। এ সময় প্রবাসে কেউ বাকি থাকলে তাদেরও সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
প্রবাসীদের বাংলাদেশি ভোটারের পাশাপাশি দেশে ভোটের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। একই দিনে একসঙ্গে গণভোটের সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রথমবারের মতো আইটি–সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালু হচ্ছে। অ্যাপে নিবন্ধনের পর সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছানো হবে প্রতীক সম্বলিত ব্যালট পেপার। ‘টিক’ বা ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে ভোট দেবেন তারা। অঞ্চলভিত্তিক নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে প্রবাসে ব্যালট পেপার পাঠানো শুরু করে ১৬ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।












