চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী আচরণ এবং বগিভিত্তিক রাজনৈতিক গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাঁকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে হল ছাত্র সংসদ। এসব অভিযোগের প্রতিবাদে গতকাল রোববার শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্ট অফিস ও হল অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ জানান। পরে তারা উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। হল সংসদের ভিপি, জিএস ও এজিএস স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ মাস দায়িত্ব পালনকালে প্রভোস্ট কোনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেননি। বরং স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হল পরিচালনার পরিবেশকে অস্থির করে তুলেছেন। অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপস্থাপন করলেই তিনি তাদের প্রতিপক্ষের মতো আচরণ করেন এবং বিভিন্ন সময় নিজের ‘অলওয়েজ’ গ্রুপের সাবেক সদস্য পরিচয় দিয়ে হুমকিসুলভ বক্তব্য প্রদান করেন।
অভিযোগে ছয়টি দফায় অনিয়মের বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রভোস্ট অনুপস্থিত থাকলে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেয়ার বিধান থাকলেও তিনি চট্টগ্রামের বাইরে অবস্থানকালেও তা পালন করেননি। সমপ্রতি টানা চার দিন চট্টগ্রামের বাইরে থাকলেও কোনো দায়িত্ব হস্তান্তর না করার বিষয়টি প্রশাসনিক অনিয়ম ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন।
এছাড়া হলের স্টোরের মালামাল নিলাম প্রক্রিয়ার পরিবর্তে প্রভোস্ট নিজের পছন্দের দুজন স্টাফের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। এতে অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, গত ১০ মাসে প্রভোস্ট হলে ভাঙা দরজা–জানালা মেরামত, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু, সাইকেল স্ট্যান্ড স্থাপন কিংবা পানির পাম্প বসানোসহ শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণে কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে হলটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
হল সংসদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, প্রভোস্টের স্বেচ্ছাচারিতা ও আর্থিক অনিয়মের কারণে আবাসিক শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তাই তাঁকে দ্রুত অব্যাহতি দিয়ে সৎ, দায়িত্বশীল ও দক্ষ কাউকে শাহ আমানত হলের নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে সতর্ক করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে হল সংসদের জিএস আবিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রভোস্টের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা তাঁর অব্যাহতি চাই।’
অন্যদিকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই দায়িত্ব পালন করতে হয়; ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য কাজও সামলাতে হয়। আমি বর্তমানে বাইরে আছি, আগামীকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।’












