সর্বশেষ গত জুনে শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এরপর সাদা বলের ক্রিকেট নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে টাইগাররা। ঐ টেস্টের পর ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে ২৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এবার তাদের সামনে টেস্ট সিরিজ। প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড, আর তাদের বিপক্ষে জয় দিয়েই সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তবে উদ্বেগ আছে। দীর্ঘ দিন পর টেস্ট ক্রিকেট খেলবে তারা। মানিয়ে তারা কতোটুকু নিতে পারবে সেটাই শঙ্কা। পাশাপাশি ব্যাটারদের ব্যর্থতার চিন্তাও মাথায় আছে টিম ম্যানেজমেন্টের। সাত মাস পর টেস্ট দলে ফিরেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। গত এপ্রিলে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ টেস্টে খেলেছিলেন তিনি। সাদমান ইসলামের সাথে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে পারেন জয়। বাংলাদেশের মিডল–অর্ডার সামলাবেন তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাস। আয়ারল্যান্ডের মতো কম খর্বশক্তির দলের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে হলে মুমিনুল–মুশফিক ও লিটনদের বড় ইনিংস খেলতে হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টেস্টে কোনো সেঞ্চুরি নেই মুমিনুলের। অন্যদিকে ২০২২ সাল থেকে টেস্টে সেঞ্চুরি নেই লিটনের। তবে ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন মুশফিক। গত জুনে শ্রীলঙ্কা সফরে গল–এ প্রথম টেস্টেই সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। ৯টি চারে ১৬৩ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের ৯৯তম টেস্ট খেলতে নামবেন মুশফিক।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে স্পিনারদের উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ। যদিও সিলেটের উইকেট পেসারদের সুবিধা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ দলে তাইজুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজের মত দু’জন কার্যকরী স্পিনার আছে। যারা আয়ারল্যান্ড ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারবেন। টেস্টে দু’জনই ২শর বেশি উইকেট শিকার করেছেন। তাইজুল ৫৫ ম্যাচে ২৩৭ এবং মিরাজ ৫৪ ম্যাচে ২০৫ উইকেট নিয়েছেন। টেস্ট ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হতে ১০ উইকেট প্রয়োজন তাইজুলের। ৭১ টেস্টে ২৪৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন সাকিব আল হাসান।বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ সামলাতে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে আয়ারল্যান্ডকে।
আইরিশ ব্যাটার হ্যারি টেক্টর বলেন, ‘আমার মনে হয়, বাংলাদেশের উইকেট নিয়ে দলের সবারই ভালো ধারণা আছে। তাই খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। ব্যাটাররা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে, সমস্যা হবে না। সকালের সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। ঐ সময়টা ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারলে ভালো কিছু হবে।’ এখন পর্যন্ত টেস্টে একবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিরপুরের ঐ টেস্টে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি ও হাফ–সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রাখেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ১২৬ এবং পরের ইনিংসে অপরাজিত ৫১ রান করেন তিনি।
২০২৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি টেস্ট খেলেছে আয়ারল্যান্ড। তিন ম্যাচই জিতেছে তারা। আফগানিস্তানকে একবার ও জিম্বাবুয়েকে ২ টেস্টে হারায় আইরিশরা। গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টেস্টে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়েকে ৬৩ রানে হারায় তারা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামবে আয়ারল্যান্ড। এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট খেলেছিল আইরিশরা। অন্যদিকে চলতি বছর চারটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটিতে জয়, দু’টিতে হার এবং একটি ড্র করেছে টাইগাররা।












