দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে আন্দোলনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মিছিলে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপে করেছে পুলিশ। এ বাধার কারণে তারা শাহবাগে ‘কলম সমর্পণ’ পালন করতে পারেননি। এ সময় আহত হয়ে অন্তত ১২৫ জন শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশের বাধায় কর্মসূচি পালন করতে না পারায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা আবার শহীদ মিনারে ফিরে যান, সেখানে গতকাল শনিবার সকাল থেকে তারা অবস্থান নিয়েছেন। তিন দফা দাবিতে কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। আজ রোববার থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বিকালে মিছিলে পুলিশের হামলার কারণে শিক্ষকরা শাহবাগে তাদের পূর্বনির্ধারিত ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফিরে গিয়ে কর্মবিরতি পালনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (কাশেম–শাহিন) সভাপতি মো. আবুল কাশেম। একই সঙ্গে তিন দাবিতে রাজধানী ঢাকায় তাদের আগের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিও চলতে থাকবে।
বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষকরা ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচি পালনের জন্য মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও জলকামান ছুড়ে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন। আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের তরফে সংগঠনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাছুদ বলেন, পুলিশের হামলায় শাহবাগে অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, শিক্ষকরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো আমরা পাইনি।
বিকাল পৌনে ৫টার আরেক শিক্ষক নেতা মুহিব উল্লাহ বলেন, আমরা ৫০ জন শিক্ষককে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এসেছি। তারা সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেলে আহত।
ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিকাল ৫টায় দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, কিছু আন্দোলনকারী ‘কলম সমর্পণের’ নামে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হয়। আনুমানিক ৪টার সময় আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে একটা দল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় পার হয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বাধা প্রদান করলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশের নির্দেশনা অমান্যকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পরবর্তীতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে।
লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা প্রাথমিকের শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও বাকি দুই দাবি হলো চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ নামে চারটি শিক্ষক সংগঠনের মোর্চার ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করছেন তারা। প্রাথমিক শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ ছাড়াও এ মোর্চায় আছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম–শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন–লিপি)।











