চলতি মৌসুমে আবহাওয়ার অনুকূলের কারণে খাগড়াছড়িতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় এখন পাকা ধানের সুবাসে ভরে উঠেছে মাঠ। কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা–মাড়াইয়ের কাজে। তবে উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে ধানের দাম না থাকায় খুশি নন তারা।
কৃষকদের অভিযোগ, বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ পড়ছে আগের চেয়ে এক হাজার টাকারও বেশি। অথচ বাজারে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র সাড়ে ৮, সাড়ে ৯শ টাকায়। ফলে উৎপাদন খরচের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য থাকায় লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
দীঘিনালার তারাবুনিয়া এলাকার কৃষক মো. আব্দুল মান্নান, নুরুল আমিন জানান, এবার ফলন ভালো হলেও দাম না পেলে আগামী মৌসুমে চাষাবাদ কমিয়ে দিতে হবে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আদুই রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তরের অনুমোদন পাওয়ার পর সরকার নির্ধারিত পরিমাণ ধান ক্রয় করবে। গত মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি ৩৭ টাকায় ধান কিনেছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে প্রচুর ধান বাজারে আসায় দাম কিছুটা কম। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করে কিছুদিন পর বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। মৌসুমের শুরুতে অল্প কিছু বিক্রি করুক বাকি ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে দুই তিন মাস পর ভালো দাম পাবে।
জেলার কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ২৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বাস্তবে চাষ হয়েছে ২৯ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ হাজার ২১৮ মেট্রিক টন।












