পটিয়া পৌরসভার পাঁচটি মৌজা অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এবং তিনটি মৌজা উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের সাতটি মৌজা অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন, নয়টি ইউনিয়নের ২৭টি মৌজা উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা এবং আটটি ইউনিয়নের ৩০টি মৌজা মধ্যম পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পানি সংকটাপন্ন এলাকার সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনা এবং জলাধার বা পানি ধারক স্তরের সুরক্ষায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পটিয়ার কিছু এলাকা পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা–নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার এ বিষয়ক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। জানা যায়, পটিয়া উপজেলার ৪ লাখের বেশি মানুষ দীর্ঘদিন পানি সংকটে ভুগছেন। শিল্পকারখানার গভীর নলকূপ ব্যবহারের কারণে গ্রামের পানির স্তর প্রতি বছর ৩ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে গেছে। হাবিলাস দ্বীপ, চরকানাই, হুলাইন, পাচুরিয়া ও হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৩৫০টি টিউবওয়েলও কার্যকারিতা হারিয়েছে। ফলে কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে এবং বোরো আবাদে লবণাক্ত পানি ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
পানি সংকটাপন্ন এলাকার জন্য প্রতিপালনীয় নির্দেশনাসমূহ হলো–পানি সংকটাপন্ন এলাকায় বাংলাদেশ পানি আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩ ও ১৮ অনুযায়ী পানি সম্পদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ব্যবহার যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে, খাবার পানি ব্যতীত অন্য কোনো কারণে নতুন করে নলকূপ স্থাপন ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং খাবার পানি সরবরাহ ছাড়া অন্য কোনো কারণে বিদ্যমান নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ থাকবে, ভূগর্ভস্থ পানি নির্ভর শিল্প বা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না, খাল, বিল, পুকুর, নদী তথা কোনো জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না এবং জলাশয়গুলো জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, জনগণের ব্যবহারযোগ্য খাস জলাশয় ও জলমহালসমূহ ইজারা প্রদান নিরুৎসাহিত করতে হবে, জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত করা যাবে না, কোনো জলাধারের সমগ্র পানি আহরণ করে নিঃশেষ করা যাবে না, ভূমি এবং পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করতে পারে এমন কাজ করা যাবে না, নদী–জলাশয়–লেক–জলাভূমিতে বসতবাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তরল ও কঠিন অপরিশোধিত বর্জ্য নির্গমন ও দূষণ করা যাবে না।
এছাড়া, অধিক পানি নির্ভর ফসল উৎপাদন নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে পানি সাশ্রয়ী ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং জনসাধারণের সুপেয় পানি ও গৃহস্থালি কাজে পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অন্যান্য নির্দেশনা প্রদান করা যাবে। এ সকল নির্দেশনা প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক। নির্দেশনা লঙ্ঘন বাংলাদেশ পানি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৯ এর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান জানান, পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে পটিয়া যেসব এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিঠি ইতিমধ্যে পেয়েছি। এ বিষয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সেসব এলাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে আমরা পর্যবেক্ষণ করবো।










