বান্দরবান থেকে গ্রেপ্তার ‘পর্ন তারকা’ যুগল দোষ স্বীকার করে আদালত জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার পল্টন মডেল থানায় করা পর্নগ্রাফি আইনের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল রোববার তাদের আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ–সিআইডির এসআই মিজানুর রহমান। খবর বিডিনিউজের।
আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা নথিবদ্ধ করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানা আসামি মুহাম্মদ আজিমের এবং আরেক মহানগর হাকিম মেহেরা মাহাবুব আসামি বৃষ্টির জবানবন্দি নথিবদ্ধ করেন।
প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই রুকনুজ্জামান এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, জবানবন্দি দেওয়ার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গেল ২০ অক্টোবর ভোররাতে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট বান্দরবানের হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় পর্ন ভিডিও তৈরির আলামত হিসেবে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, সিমকার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। পরদিন তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
সমপ্রতি একটি পর্ন সাইটে শীর্ষ তারকাদের তালিকায় ওই যুগলের নাম উঠে আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ‘দ্য ডিসেন্ট’। অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বাংলাদেশের আইনে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ না থাকলেও তাদের কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হয়নি। সিআইডি বলছে, এই যুগল কেবল নিজেরাই পর্ন ভিডিও তৈরিতে সম্পৃক্ত নয়, অন্যদেরও এ জগতে ‘সম্পৃক্ত করছেন’ বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক একটি প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে এক বছরে তাদের প্রকাশিত ১১২টি ভিডিও ২ কোটি ৬৭ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়।
তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একাধিক আন্তর্জাতিক পর্ন ওয়েবসাইটে তারা ভিডিও আপলোড করতো। এভাবে খোলাখুলি প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রাম, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেও তারা প্রচারণা চালাতো। এসব প্রচারণায় ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়ার জন্য অন্যদেরকে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করতো তারা। ‘পর্ন তারকা’ যুগলকে গ্রেপ্তারের পর সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারা এ যুগল দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও অনলাইনে রয়েছে তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বহু ছবি। বিষয়টি ‘সামাজিক ও নৈতিকভাবে উদ্বেগজনক’ এবং একইসঙ্গে বেআইনি হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন সিআইডির সাইবার তদন্ত বিভাগের ইন্সপেক্টর শামীম হোসেন।











