দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো বিভেদ তৈরি হয়নি বলে দাবি করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল রোববার দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অনেকে বলেন, আমাদের মধ্যে বিভেদ হচ্ছে। আমি মনে করি, আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ হচ্ছে না। আমাদের প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব দর্শন, চিন্তা, ভাবনা, রূপরেখা আছে। এজন্য সবকিছু এক জায়গায় হবে না। খবর বিডিনিউজের।
তাহলে তো আলাদা দল হতো না। তাহলে তো আমরা বাকশাল হয়ে যেতাম। সুতরাং যার যার অবস্থানে আমাদের যে ইশতেহার আছে, আমরা সেই ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যাব। জনগণের ম্যান্ডেট আমরা নেব।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। সনদ বাস্তবায়ানে একটা গণভোট আয়োজনে প্রায় সব দল রাজি হলেও এর দিনক্ষণ নিয়ে একমত হতে পারছে না দলগুলো। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বলছে, ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের দিনে গণভোট হতে পারে। কিন্তু জামায়াতসহ কয়েকটি দল দাবি তুলেছে, আগামী নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে। মূলত এমন প্রেক্ষাপটে নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ না থাকার কথা বললেন আমীর খসরু। তবে রাষ্ট্রের বড় ধরনের সংস্কার যে বিএনপি নির্বাচনের মধ্যেই চায়, সেটাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বিএনপির এ নেতা বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে। এটাও ঠিক অনেকগুলো পরিবর্তন রাতারাতি আসবে না। এগুলো একটা সময়ের মাধ্যমে পাবলিক ডিসকোর্সে আলাপ–আলোচনার মধ্যে রাখতে হবে। যে কয়টার সমাধান হবে না, সেটাকে আমাদের জনসমক্ষে আলাপ–আলোচনার মধ্যে রাখতে হবে। আলোচনা চলতে থাকবে। যেটা আজকে হয় নাই, সেটা আগামী ছয় মাস পরে হবে। যেটা ছয় মাস পরে হবে না, সেটা এক বছর পরে হবে। পশ্চিমা দেশগুলোয় এই প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের চুতর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ সভা হয়।
নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। নির্বাচন হচ্ছে ‘কারেকশন প্রসেস, ফিল্টারেশন প্রসেস’। এই নির্বাচন ধারাকে আমরা যেন বাধাগ্রস্থ না করি।
নির্বাচনকে যদি বাধাগ্রস্থ করতে যাই, তাহলে কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার কোনো সুযোগ নাই। আমাদের কাছে যেসব বিষয়ে অমিল থাকবে, আমরা জনগণের কাছে যাব, আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নেব, ম্যান্ডেট নিয়ে সেটা আমরা সমাধান করব। তিনি বলেন, রাস্তায় সাংঘর্ষিক অবস্থা, প্রতিহিংসার মাধ্যমে এগুলোর সমাধান করতে গেলে আবার শেখ হাসিনার জমানায় ফিরে যেতে হবে। এটা করা যাবে না। আমাদের আজ সবাইকে মিলে সত্যিকার অর্থে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে হবে : আমীর খসরু বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এখন রাস্তার আন্দোলন নয়, এখন আন্দোলন হচ্ছে, জনগণের কাছে আমাদেরকে যেতে হবে। আমরা সাংঘর্ষিক রাজনীতির দিকে যেতে পারব না, আমরা হিংসা–প্রতিহিংসার রাজনীতির দিকে যেতে পারব না। আমরা যদি পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করে রাজনীতি করি, তাহলে সেই পুরনো ‘কালচারে’ আমাকে ফিরে যেতে হবে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও ফারুক খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।












