সারা বছর পাওয়া যায় এমন উপকারী সবজির মধ্যে লাউ একটি। লাউ চাষে দেশের সবচেয়ে উপযোগী এলাকার মধ্যে মীরসরাই উপজেলা অন্যতম। এই মৌসুমি সবজি চাষ করে মীরসরাইয়ের অনেক কৃষক ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে মীর হোসেন অন্যতম। বছরে লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় বারোমাসি এই সবজিতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। খৈয়াছরা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান (৫৬) জানান, ১০ বছর ধরে তিনি নানামুখী সবজি চাষ করছেন। কিন্তু বিভিন্ন সময় নানা সবজি চাষে বিভিন্নভাবে প্রতিকূলতায় পড়তে হয়েছে তাকে। তবে লাউ চায়ে বরাবরই কম–বেশি সফল হয়েছেন। এ বছর তার করলা চাষে ক্ষতি হলেও বর্তমানে লাউ চাষে আলোর মুখ দেখছেন। তার নিজের কোনো জমি নেই। বর্তমানে পূর্ব পোলমোগরা গ্রামে ৫০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে বারোমাসি এ লাউ চাষ করছেন। লাখ টাকা আয় হয়েছে ইতোমধ্যে। আরো লাখ টাকা আয়ের প্রত্যাশাও রয়েছে তার।
উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মীর হোসেন বলেন, আমার নিজের জমিতে প্রতি বছরই আমি লাউ বেশি চাষ করি। ১০ গন্ডা জমিতে প্রায় লাখ টাকা আয় হয় প্রতি বছর। এ বছর লাউ চাষের জন্য জমি তৈরি, জমিতে বাঁশের চাল, সার ও বীজে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদে খরচ করি। প্রতি ১৫ দিন অন্তর জমিতে সার দিতে হয়। এতে খরচ হয় ১ হাজার টাকা।
মীর হোসেন জানান, বর্তমানে বারোমাসি লাউ চাষে তিনি লাভবান হয়েছেন। দুদিন পর পর ক্ষেত থেকে ৮০–১০০ পিস লাউ সংগ্রহ করেন। এ লাউ পাইকারি হিসেবে কাঁচাবাজারে প্রতি পিস ২৫–৩০ টাকায় বিক্রি করেন। প্রতি মাসে তার বিক্রি ৩০–৩২ হাজার টাকা। বছরে তিনি বিক্রি করছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। খরচ বাদে বছরে থাকছে ১ লাখ টাকা। লাউ চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। মীর হোসেনের সাফল্য দেখে এলাকার অনেক কৃষক লাউ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে মীর হোসেন বলেন, মীরসরাই কৃষি অফিস থেকে আমাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হয় না। এ বিষয়ে উপজেলা জেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা প্রতাপ রায় জানান, কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে মাঠ তদারকি করছে এবং প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। এবারও শতাধিক কৃষক লাখপতি হয়েছে। তিনি বলেন, লাউয়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন আছে যেমন : সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি ও ফাইবার। লাউ সুগার ফ্রি, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি উপকারী সবজি। লাউয়ে পানি থাকে বিধায় খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। লাউ চাষ অল্প খরচে অধিক লাভজনক বলে কৃষকদের লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।












