দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ফটিকছড়ি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (বরখাস্ত) আজিমেল কদরকে ঘুষ গ্রহণের দায়ে ২০২৩ সালের ১৫জুন আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চট্টগ্রামের আদালত। সেই কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ি শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন। এই খবর শিক্ষক সমাজে পৌঁছালে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক নেতারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনতিবিলম্বে তাকে প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার দাবি জানান তারা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ি শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন ২০১৯ সালে ঘুষ গ্রহণের সময় হাতেনাতে দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষা অফিসার আজিমেল কদর। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, সরকারি বিধি মতো ওই কর্মকর্তাকে এখানে যোগদান করতে হবে। তারপর অন্যত্র বদলি করা হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ফটিকছড়ির বেড়াজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তারকে বদলির জন্য ঘুষ দাবি করেন শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ তাসলিমা আক্তার দুদক চট্টগ্রাম জেলা অফিসে অভিযোগ করেন। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুদক টিম ফাঁদ পেতে ঘুষের ১০ হাজার টাকাসহ আজিমেল কদরকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ফটিকছড়ি থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। দুদক তদন্ত শেষে আদলতে চার্জশিটও দাখিল করে। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় মোট নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধি ১৬১ ধারায় ১ বছর ৬ মাস ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ১ বছর ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।’
সূত্র আরো জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আজিমেল কদর উচ্চ আদালতে আপিল করেন। তার আপিল গৃহীত হয় এবং দুদকের এক সভায় ওই মামলায় আর আপিল না করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাই বিধি মতে, তাকে শেষ কর্মস্থলেই যোগদান করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ নেত্রী রহিমা বেগম জানান, শিক্ষকের অভিযোগে দুদকের হাতে তিনি গ্রেপতার হন। সাজাও হয়। কিন্তু আবার কিভাবে তিনি এই স্থলে যোগদান করেন? শিক্ষক সমাজ এটি মানতে পারছে না। তাই আমরা তাকে প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচি দেবো।












