বাংলাদেশ থেকে দূরে যুক্তরাষ্ট্রে মাইনর লিগ ক্রিকেটে খেলতে গিয়ে যেন পুরনো স্মৃতিতে ফিরে গেছেন সাকিব আল হাসান। সমপ্রতি ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি তার বর্তমান ক্রিকেট উপভোগ করা, অবসর পরিকল্পনা এবং তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা বিতর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। আমেরিকায় খেলার অভিজ্ঞতাকে ‘খুব উপভোগ্য’ বলে বর্ণনা করেন সাকিব । তিনি বলেন সত্যি বলতে আমি এটা খুব উপভোগ করেছি। অনেক স্থানীয় খেলোয়াড়ের সাথে পরিচিত হয়েছি। এমন কয়েকজনের সাথে দেখা হয়েছে যাদের সাথে আমি আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলেছি। এটা আমাকে আমার অনূর্ধ্ব–১৯ দিনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। আমার ছোটবেলার সেই ক্রিকেটীয় পরিবেশকে পুনরুজ্জীবিত করাটা আমার জন্য খুব মজার ছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমি সেই স্মৃতিগুলোতেই ফিরে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশে তাকে ঘিরে ‘অর্থকেন্দ্রিক’ বা ‘শোরুম আল হাসান’ ব্যঙ্গের বিষয়েও কথা বলেন সাকিব। তিনি এই ধারণাকে ‘সাংবাদিকদের তৈরি করা গল্প’ বলে মনে করেন। সাকিবের মতে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এগুলো কিছু সাংবাদিক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালের তৈরি করা গল্প। যা মানুষকে এভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে। কারণ বাংলাদেশে আমি যা করেছি তা অন্য কেউ করেনি। এটা সমালোচকদের জন্য নতুন ছিল। এটা হজম করা তাদের জন্য কঠিন ছিল। এখন যদি অন্য কেউ এটা করে তবে তা তাদের ততটা প্রভাবিত করে না যতটা আমাকে নিয়ে করেছিল। কারণ আমিই প্রথম ছিলাম। আর সেটাই ভালো এবং খারাপ দিক।
জনগণের ধারণা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন উল্লেখ করে সাকিব বলেণ মানুষের নিজস্ব ধারণা থাকতে পারে। এবং আমি এটা নিয়ে চিন্তিত নই বা তারা কী ভাবছে তা নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ আমার কাছের মানুষরা কী ভাবছে তাতেই আমি আগ্রহী। তবে আমি মনে করি না তাদের কেউই এমনটা ভাবে। ২০২৪ সালের গণ–আন্দোলনের সময় রাজনৈতিক অবস্থান না নেওয়ায় যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন, সে বিষয়েও সাকিব তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেন আমি মনে করি ওটা কেবল একটা মুহূর্ত ছিল যা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল। হয়তো তারা অন্য কিছু আশা করেছিল এবং আমি তা করার মতো অবস্থায় ছিলাম না অথবা সত্যি বলতে আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিলাম না। তিনি স্বীকার করেন আমার জন্য এটা খুব কঠিন ছিল কারণ আমি তখন বাড়ি থেকে অনেক দূরে ছিলাম। আমি মনে করি এটাই একমাত্র সময় যখন তারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, যা আমি তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বুঝি এবং সম্মান করি। তবে এ নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনা নেই। তবে আমি মনে করি মানুষ এখন এটা আরও বেশি করে বুঝতে শুরু করেছে।
সাক্ষাৎকারে সাকিব তার অবসর সংক্রান্ত সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানান আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নিইনি। বরং তিনি ঢাকার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভক্তদের সামনে শেষবারের মতো বিদায় জানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সাকিব বলেন ১০০ ভাগ দেশের মাটিতে বিদায় নিতে চাই। আমি মনে করি এটা আমার চেয়ে ভক্তদের জন্য বেশি। যদি তা ঘটে তবে সেটা আমার ভক্তদের জন্য এবং আমার জন্য সেরা ব্যাপার হবে।












