চাকসুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হট্টগোল

বিতর্কের মুখে শপথ নেননি নির্বাহী সদস্য আকাশ দাশ

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে নবনির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা চাকসুর নির্বাহী সদস্য আকাশ দাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। যার ফলে গতকাল দুপুর ১টার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত শপথে তিনি অংশ নেননি।

এদিকে, আকাশের ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল হয়। নবনির্বাচিত অনেক প্রতিনিধি আকাশের সঙ্গে একই মঞ্চে শপথ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এর মধ্যেই আকাশের অনুপস্থিতিতে বাকিরা শপথ নিলেও অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চাকসুর পরিচালক অধ্যাপক জাহেদুর রহমান চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে ভোটারদের ‘ভেড়ার পাল’ বলে মন্তব্য করায় শিক্ষার্থী ও প্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে শপথের অনুষ্ঠানে বাকবিতণ্ডা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে আকাশ দাশ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছিলেন “ধর্ষণে ছেলের দোষ যদি ৭০ ভাগ থাকে, মেয়েরও ৩০ ভাগ দোষ আছে।” এই মন্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শিক্ষার্থীরা আকাশের বক্তব্যকে নারীবিদ্বেষী ও অসভ্য মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় আকাশ দাশের সাথে শপথ নিতে অসম্মতি জানান কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের বহু নির্বাচিত প্রতিনিধি।

গত মঙ্গলবার আলাওল হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত নূরনবী হাসান ফেসবুকে লেখেন, “কাল যদি আকাশ দাশের মতো বিকৃত মানসিকতার মানুষের সঙ্গে শপথ নিতে হয়, আমি সে শপথ প্রত্যাখ্যান করব।” তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন হলটির ভিপি ও আরও কয়েকজন নবনির্বাচিত নেতা। শাহজালাল হল সংসদের এজিএস ইমতিয়াজ জাবেদও একই ঘোষণা দেন।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আকাশ দাশ বলেন, আমার ফেসবুকের একটা পোস্টে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় আমি শপথ গ্রহণ করতে গেলে পরিস্থিতি হয়তো আরও খারাপ হয়ে যেত। এমনও হতে পারত, আমার একজনের কারণে পুরো চাকসু নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণে ব্যাঘাত ঘটত। আর গতকাল আমার প্যানেল (শিবির সমর্থিত সমপ্রীতির শিক্ষার্থী জোট) থেকেও আমার বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের দিক থেকেও আমাকে কিছু জানানো হয়নি। যার কারণে আমি শপথ করতে যাইনি।

এ বিষয়ে শিবির প্যানেল থেকে নির্বাচিত জিএস সাঈদ বিন হাবিব বলেন, যেহেতু আকাশ দাশের ফেসবুক পোস্টের কারণে ক্যাম্পাসে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে কারণে সে শপথ গ্রহণ করতে আসেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সুবিধা পাচ্ছেন না উদ্যোক্তারা
পরবর্তী নিবন্ধশপথ নিলেন চাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা