দুদকের দুই মামলায় এনজিও কর্মকর্তার ১০ বছরের কারাদণ্ড

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২১ অক্টোবর, ২০২৫ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

ভূমিহীনদের মাঝে ঋণ বিতরণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত ঋণ আদায়ও করা হয়। কিন্তু রেডল নামের এনজিও চুক্তি ভঙ্গ করে আদায় করা উক্ত ঋণের টাকা ভূমি মন্ত্রণালয়ে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করে বসেন। জেলার ফটিকছড়ি ও রাউজানের এমন পৃথক দুটি ঘটনায় দুদকের দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় রেডলের ( রিহ্যাবিলিটেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ফর ল্যান্ডলেস) এক কর্মকর্তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তাকে আত্মসাৎ হওয়া টাকার সমপরিমাণ ২ লাখ ২৩ হাজার ১৭০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান মামলা দুটির রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সৈয়দ হাসানুজ্জামান লোটন। ঘটনার সময় তিনি রেডলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তিনি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন না। জামিনে গিয়ে তিনি পলাতক আছেন। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

আদালতসূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আদর্শ গ্রামের ভূমিহীনদের মধ্যে ঋণ বিতরণের জন্য রেডলের মহাসচিব সৈয়দ হাসানুজ্জামান লোটনকে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে লোটনের একটি চুক্তিও হয়। চুক্তিতে বলা হয়, রেডল ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে বিতরণকৃত ঋণের টাকা আদায় করে ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ ১৯৯৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা ভূমি মন্ত্রণালয়কে ফেরত দেবে। দুদক পিপি রেজাউল করিম রনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, ১২ লাখ টাকার মধ্যে ফটিকছড়ির রাঙ্গামাটিয়া আদর্শ গ্রামের ভূমিহতীনদের মধ্যে ৭৭ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ে তা আদায়ও করা হয়। কিন্তু রেডলের কর্মকর্তা তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেননি। তিনি উক্ত টাকা আত্মসাৎ করে বসেন। ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ ৭৯ হাজার ১৭০ টাকা।

দুদকের আরেক পিপি মুহাম্মদ কবির হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, জেলার রাউজানে থাকা পূর্ব রাউজান আদর্শ গ্রামের ভূমিহীনদের জন্য রেডল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি তা ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা আদায়ও করে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী রেডল কর্মকর্তা লোটন তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

আদালতসূত্র জানায়, ফটিকছড়ি ও রাউজানের উক্ত পৃথক দুটি ঘটনায় ২০০৩ সালের ১৮ মে দুদক চট্টগ্রামের তৎকালীন সহকারী পরিদর্শক এম এন আলম বাদী হয়ে উক্ত পৃথক মামলাটি দুটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে লোটনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল পরবর্তী তার বিরুদ্ধে দুটি মামলাতেই ২০০৪ সালের ৩০ এপ্রিল চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ সাহেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ফটিকছড়ি থানা ও রাউজান থানার পৃথক দুটি মামলায় লোটনকে ৫ বছর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুই মামলার আত্মসাৎকৃত টাকার সমপরিমাণ তাকে জরিমানা করা হয়েছে। ফটিকছড়ি থানার মামলায় ৬ জন এবং রাউজান থানার মামলায় ৫ জনের সাক্ষ্য রেকর্ড হয়েছে বলেও জানান বেঞ্চ সহকারী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওএসডি ৯ সচিবকে পাঠানো হলো অবসরে
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরের অচলাবস্থা কাটল