প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা থেকে অংশবিশেষ বাদ দেয়ার দাবি

বৃহত্তর সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ at ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

প্রস্তাবিত ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ উপজেলা থেকে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার অংশ বিশেষ (, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড)-এর নাম বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আগামী ৭ দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে সড়ক অবরোধ, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও এবং গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

গতকাল শনিবার দুপুরে নগরের জিইসি মোড়ে একটি কনফারেন্স হলে ‘বৃহত্তর সুয়াবিল অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম’ এর ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, কোনো গণশুনানি না করে এবং এলাকাবাসীর মতামত ছাড়াই প্রস্তাবিত ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলার সঙ্গে বৃহত্তর সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার অংশ বিশেষ সংযুক্ত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও হালদা নদী গবেষক প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া। বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর পরিচালক রকিবুল আলম চৌধুরী, উত্তর ফটিকছড়ি নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক ওসমান গণি মজুমদার, এডভোকেট ইসমাইল গনি, সুয়াবিল ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস এম সফিউল আলম, ডা. এস এম ফরিদ, সুয়াবিল ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন ও মো. হামিদুর রহমান, সুয়াবিলের বাসিন্দা এস এম নঈম উদ্দিন, মো. রাসেল, গাজী আমান উল্লাহ, মো. শাহজাহান, মাহবুবুল আলম, আমান উল্লাহ ও ফয়জুল ইসলাম বাচ্চু। ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, মাঠ প্রশাসনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে কিংবা জেলা প্রশাসকের প্রেরিত সুপারিশে সুয়াবিল ইউনিয়ন বা নাজিরহাট পৌরসভার কোনো অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরবর্তীতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভৌগলিক তথ্য বিকৃত করে নাম সংযোজন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দিয়েছে এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সাথেও সাক্ষাৎ করেছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলা গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে এতে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডকে সংযুক্ত করার প্রস্তাব আইনি জটিলতা তৈরি করবে। এ নিয়ে বৃহত্তর সুয়াবিলের জনগণ উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে। প্রশাসনিক বিভাজনে জনগণের মতামতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

রকিবুল আলম চৌধুরী প্রস্তাবিত ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলার সদর দপ্তর যৌক্তিক স্থানে স্থাপনের দাবি জানিয়ে বলেন, ফটিকছড়ির আয়তন ফেনী জেলা থেকেও বড়। এখানে তিনটি উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি বহু আগের। সরকার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু ইউনিয়ন নিয়ে ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলা নামে আলাদা উপজেলা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা অত্যন্ত আনন্দের। তবে অবশ্যই সেই উপজেলার সদর দপ্তর হতে হবে যৌক্তিক হিসাবে নারায়ণহাটের আশেপাশে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আবারও ভূজপুরে উপজেলা নিয়ে যাওয়ার জন্য দক্ষিণ ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার অংশ বিশেষকে সংযুক্ত করা হচ্ছে।

ওসমান গণি মজুমদার বলেন, ফটিকছড়িকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। উল্লেখিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ফটিকছড়িতে আগুন জ্বলবে। উত্তর ফটিকছড়ির আয়তন পুরো উপজেলার অর্ধেক। পৌনে দুই লক্ষ ভোটারের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হলে ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রামখাগড়াছড়ি যোগাযোগ অচল হয়ে যেতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারের যুবলীগ নেতা মোনাফ ঢাকায় গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধপ্যাসিফিকের ৮ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ