মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন অনশনে থাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ শনিবার শহীদ মিনার থেকে ‘পতাকা মিছিল’ এবং আগামীকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন–যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন তারা। এর আগে দাবি আদায়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ছয় দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়া শিক্ষক–কর্মচারীরা। ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের’ ব্যানারে গত রোববার শুরু হয় এ আন্দোলন। বাড়ি ভাড়ার ভাতা বাড়ানোসহ শুরু তাদের দাবির মধ্যে চিকিৎসাভাতা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার বিষয়টি ছিল। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার তারা সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিও যুক্ত করেন। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, আমরা দুপুর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছি। শনিবার (আজ) দুপুর ১২টায় আমরা শহীদ মিনার থেকে পতাকা মিছিল বের করব। আর রোববার দুপুরের মধ্যে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন না হলে আমরা ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করব। আমাদের শিক্ষক–কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যসহ ১৫ থেকে ১৬ লাখ লোক ঢাকায় ঢুকে পরলে কী অবস্থা হবে, তা বিবেচনায় নিয়ে আমরা সরকারকে আগেই দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই। দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনারে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চলবে বলেও জানান এ শিক্ষক নেতা।
এদিকে গত রোববার শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতিও পালন করছেন শিক্ষক–কর্মচারীরা। গত মঙ্গলবার সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। গত বুধবার তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সবশেষ বৃহস্পতিবার ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে শিক্ষক–কর্মচারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানায় সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন। এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেতেন। এখন পান ৫০ শতাংশ হারে।