যে সাত কারণে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না বামপন্থি ৪ দল

| শুক্রবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

রাষ্ট্র সংস্কারের সুপারিশ ও অঙ্গীকারনামা সম্বলিত জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে বাম ধারার চার দল। বিদ্যমান সংবিধানের চার মূলনীতিকে বাদ দেওয়া, অঙ্গীকারনামায় মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও স্বাধীনতার ঘোষণা বাদ দেওয়াসহ সাত কারণে তারা সনদে স্বাক্ষর না করার কথা বলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পল্টনের মুক্তি ভবনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলবাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলবাংলাদেশ জাসদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা কারণগুলো তুলে ধরেছে। খবর বিডিনিউজের। দলগুলোর তরফে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিকে প্রকারন্তরে অস্বীকার করা হচ্ছে এই সনদে। আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না, এমন বিষয়ে অঙ্গীকার করে সনদে স্বাক্ষর করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ‘কেন আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে পারছি না’, এ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার ৭টি কারণ তুলে ধরা হয়। চার দল বলছে. জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনাকালেই তারা বারবার বলেছে, যেসব বিষয়ে সবার ঐকমত্য রয়েছে কেবলমাত্র সেসব বিষয়েই সবার স্বাক্ষর নেওয়া যেতে পারে। ভিন্নমতগুলো অতিরিক্ত (এনেঙ) প্রতিবেদন হিসেবে সনদে সংযুক্ত থাকতে পারে। ২. সনদের প্রথম অংশে পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি। তারা বারবার সংশোধনী দিলেও সেগুলো সন্নিবেশিত করা হয়নি। ৩. শেষ অংশে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অঙ্গীকার করতে বলা হয়েছে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ভিন্নমত থাকলে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার কীভাবে সম্ভব তা চার দলের কাছে বোধগম্য নয়। ৪. অঙ্গীকারনামার ২ নম্বরে জুলাই সনদ সংবিধানের তফসিলে বা যথোপযুক্ত স্থানে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। তারাও সর্বসম্মত জুলাই সনদ সংবিধানে যুক্ত করার পক্ষে। কিন্তু নোট অব ডিসেন্টসহ কীভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে, তা চার দলের বোধগম্য নয়। ৫. অঙ্গীকারনামার ৩ নম্বনে জুলাই সনদ নিয়ে কেউ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারবে না বলে যে অঙ্গীকার রয়েছে, এটি নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। ৬. এছাড়াও সংবিধানের ১৫০ () অনুচ্ছেদে ক্রান্তিকালীন বিধানে ষষ্ঠ তফসিলে থাকা স্বাধীনতার ঘোষণা ‘ডিক্লারেশন অব ইনডিপেন্ডেন্স’ এবং সপ্তম তফসিলে থাকা ‘প্রোক্লেমেশন অব ইনডিপেন্ডেন্স’ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি, সেটা বাদ দিলে তো বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকে না। অথচ জুলাই সনদ সংবিধানের তফসিলে যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। ৭. জুলাই সনদের পটভূমিতে অভ্যুত্থান পরবর্তী সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের ‘রেফারেন্স’ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার কথা আগে পাঠানো খসড়া সনদে উল্লেখ থাকলেও চূড়ান্ত সনদে ১০৬ অনুচ্ছেদের কথা বাদ দেওয়া হয়েছে।

এসব কারণ তুলে ধরে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, এই সাতটি বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়াতে আমাদের পক্ষে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা সম্ভব হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবি ছাত্রদলের চার নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার
পরবর্তী নিবন্ধতৃতীয় দফায় বাড়ল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ