বিপিএল আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ সরে যায়নি পুরোপুরি। তবে সেই আঁধার সরিয়ে আলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিসিবি। সম্ভাব্য নানা প্রক্রিয়া তারা এগিয়ে নিচ্ছে। প্লেয়ার্স ড্রাফটের সম্ভাব্য একটি দিন ঠিক করা হয়েছে। আগেরবারের চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলের প্রাইজমানি ঠিক করা হয়েছে। আরেকটি বড় সিদ্ধান্তও নিয়েছে বোর্ড। বহুদিন ধরে আলোচনার পর অবশেষে এবার রাজস্বের ভাগ দেওয়া হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে বুধবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি বিপিএল নিয়ে নানা পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তগুলোর কথা জানান বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন। গত ৬ অক্টোবর বিসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সভাতেই সিদ্ধান্ত হয়, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ীই আগামী ডিসেম্বর–জানুয়ারিতে বিপিএল আয়োজন করতে চান তারা। সামনে সময় যদিও খুবই কম তবু চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন বিসিবির নব নির্বাচিত কমিটি। ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবেদন করতে বলা হয়েছে এর মধ্যেই। যেটির শেষ সময় আগামী ২৮ অক্টোবর। আমজাদ হোসেন জানান, এবার ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি টাকা।
যারাই আবেদন করবে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে তাদের দুই কোটি টাকার পে–অর্ডার জমা দিতে হবে। যেটা প্রথম বছরে তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি হিসেবে বিবেচিত হবে। যাদের আবেদন গ্রহণ করা হবে না বা যারা ফ্র্যাঞ্চাইজি পাবে না, পরবর্তী কার্যদিবসেই তাদের সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি প্রতি বছর ১৫% করে বাড়ানো হবে। যেহেতু পাঁচ বছরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া হচ্ছে তাই ব্যাংক গ্যারান্টি দেওয়া বাধ্যতামূলক। এসব নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফিডব্যাক এসেছে। কাজেই ব্যাংক গ্যারান্টি, প্লেয়ার্স পেমেন্ট, স্মুথ অপারেশন, সবকিছু নিশ্চিত করার জন্য ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে। এটার সময়সীমা ছয় মাস। এর মধ্যে কাভার করতে হবে। ক্রিকেট বিশ্বের সব প্রতিষ্ঠিত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই দলগুলি টুর্নামেন্টের রাজস্বের ভাগ পায় এবং তাদের আয়ের একটি আর্থিক কাঠামো থাকে। বিপিএলে সেটা কখনোই ছিল না। বছরের পর বছর ধরে দাবি উঠলেও বিসিবি বরাবরই তা উপেক্ষা করেছে। অবশেষে এবার থেকে তা হচ্ছে। এছাড়াও প্রাইজমানি বাড়ানোসহ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য আরও কিছু আকর্ষণীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবার।
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে আকর্ষণ করার জন্য বেশ কিছু রেভেনিউ শেয়ারিং মডেল নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রাইজমানি এবার চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। রানার্স আপ দল পাবে ১ কোটি ৭৫ লাখ। এর বাইরে আমাদের তিনটা যে মেজর আয়ের উৎস, ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিডিয়া রাইটস, গ্রাউন্ড রাইটস আর টিকেট বিক্রি থেকে আয়, এই তিনটারই নেট প্রফিটের উপর ৩০ শতাংশ ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও আমাদের যে গ্রাউন্ড প্যারিমিটার বোর্ড থাকবে। যখন যে দলের খেলা হবে, ওই বোর্ডে তখন ম্যাচের ৩০ মিনিট সময় একেকটি দলের জন্য বরাদ্দ থাকবে। দলগুলো ওই সময়ের মধ্যে তাদের স্পনসরদের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারবে বিনামূল্যে। প্লেয়ার্স ড্রাফটের সম্ভাব্য সময় ঠিক করেছেন তারা ১৭ নভেম্বর। গত বছর তাড়াহুড়ো বিপিএল আয়োজন করতে গিয়েই অনেক গড়বড় করেছিল বিসিবি। এবার এত কম সময়ের মধ্যে বিপিএল আয়োজন না করে জাতীয় নির্বাচনের পরে নেওয়া যেত কি না এই প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বিবেচনা করলে এপ্রিল–মে মাসে সবসময় বৃষ্টি থাকে। এছড়া ওই সময় পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ আছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সিরিজ আছে। তাই ডিসেম্বর–জানুয়ারি আমাদের উইন্ডো।