বন্দরে ৮ ঘণ্টা বন্ধ ছিল কন্টেনার পরিবহন

ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রতিবাদ ট্রেইলর অপারেটরদের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আরোপিত নতুন ট্যারিফে গেট পাস, যানবাহন প্রবেশ ফি ও বিভিন্ন লাইসেন্স সংক্রান্ত চার্জ বৃদ্ধি এবং সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে আদায়ের প্রতিবাদে ট্রেইলর অপারেটররা প্রায় ৮ ঘণ্টা কন্টেনার পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল। গতকাল বিকেল ৪টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডিপোতে আমদানি পণ্য বোঝাই এবং ডিপো থেকে বন্দরে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রতিবাদে হুট করে কন্টেনার পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করার পর রাত ১২টার দিকে পুনরায় কন্টেনার পরিবহন শুরু হয়।

সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ট্যারিফ কার্যকর করা হয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে চালু করা নতুন ট্যারিফে গেট পাস, যানবাহন প্রবেশ ফি ও বিভিন্ন লাইসেন্স সংক্রান্ত চার্জ বৃদ্ধি এবং সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত করা হয়েছে। বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে বর্ধিত ট্যারিফের নোটিশ প্রদান এবং বর্ধিত ট্যারিফ আদায় করা হলে বিকেল ৪টা থেকে ট্রেইলর অপারেটরেরা কন্টেনার পরিবহন বন্ধ করে দেয়। তারা ১৯টি ডিপো থেকে কোনো রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার বন্দরে নেয়নি, একইসাথে বন্দর থেকেও কোনো আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার আইসিডিতে নেয়নি। বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করতে যাওয়া ট্রেইলরগুলো খালি অবস্থায় বেরিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেনার পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়ায় বড় ধরণের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় বলেও সূত্র জানিয়েছে।

নতুন ট্যারিফে দৈনিক অস্থায়ী গেট পাস ফি (জনপ্রতি): মূল ফি ১০০ টাকার সাথে ১৫ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ১১৫ টাকা। ভারী যানবাহন প্রবেশ ফি (ট্রাক, ট্রেইলার, বাস ইত্যাদি) মূল ফি ২০০ টাকার সাথে ৩০ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ২৩০ টাকা। হালকা যানবাহন প্রবেশ ফি (মাইক্রোবাস, কার, জিপ) মূল ফি ১২০ টাকার সাথে ১৮ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ১৩৮ টাকা। ছোট যানবাহন প্রবেশ ফি (অটো রিকশা, মোটরসাইকেল) এর মূল ফি ১০০ টাকার সাথে ১৫ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ১১৫ টাকা। স্থায়ী গেট পাস ফি মূল ১১৫০ টাকার সাথে ১৭২.৫০ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ১৩২২.৫০ টাকা, স্থায়ী গেট পাস হারানো, স্থায়ী গেট পাশ বিলম্বে নবায়ন, জেটি সরকার লাইসেন্স ফি (প্রতি বছর), জেটি সরকার লাইসেন্স হারানো ফি এবং জেটি সরকার লাইসেন্স বিলম্বে নবায়ন মূল ফি ১১৫০ টাকার সাথে ১৭২.৫০ টাকা ভ্যাট যোগ করে মোট ১৩২২.৫০ টাকা করা হয়েছে।

ক্ষুব্ধ ট্রেইলর মালিকেরা বলেন, আগে একটি কন্টেনার মুভার বন্দরে প্রবেশ করতে ফি দিতে হতো সর্বসাকুল্যে ৫৭ টাকা। যেটা এখন করা হয়েছে ২৩০ টাকা। এভাবে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ফি আগের তুলনায় থেকে তিন থেকে চারগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ট্রেইলর অপারেটরেরা ফি কমিয়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে কন্টেনার পরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড এবং বেসরকারি আইসিডিগুলোতে কয়েক হাজার কন্টেনার আটকা পড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, কারা গাড়ি রেখে বন্দরের দুইটি গেট বন্ধ করে দিয়েছে। মালিকেরা বলছেন, তারা রাখেননি, শ্রমিকেরা বলছেন তারাও রাখেননি। বিষয়টি নিয়ে সবার সাথে আলোচানা করার পর রাত ১২টার দিকে পুনরায় পণ্য বোঝাই কন্টেনার পরিবহন শুরু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে বহিরাগতদের জমায়েতকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ
পরবর্তী নিবন্ধএইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ আজ