চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। গতকাল বিকেলে ডেন্টাল ইউনিটের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। তবে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে জরুরি বিভাগে সীমিত আকারে ডেন্টাল সেবা চালু রাখার কথা জানিয়েছেন তারা।
বক্তারা বলেন, ডেন্টাল ইউনিটে রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে, কিন্তু অবকাঠামো ও সরঞ্জাম সেই তুলনায় ন্যূনতম পর্যায়েও উন্নত নয়। তিন মাস আগে রোগীদের সিরিয়াল দিতে হয়, অনেক সময় এক রোগীর ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত না করেই অন্য রোগীর মুখে ব্যবহার করতে হচ্ছে যা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ছয়টি ব্যাচের শিক্ষার্থীর জন্য শ্রেণিকক্ষ মাত্র চারটি। পর্যাপ্ত চেয়ার টেবিল নেই, যন্ত্রপাতি অপ্রতুল, জীবাণুমুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় মানসম্পন্ন শিক্ষা ও চিকিৎসা দুটোই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসক আবরার আল ফয়সাল বলেন, চট্টগ্রামে ডেন্টাল রোগী দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দাবিগুলো আমলে নিচ্ছে না। আমরা জানি রোগীরা কষ্ট পাচ্ছেন, কিন্তু এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত তাদেরই স্বার্থে।
আন্দোলনকারীরা জানান, পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা, অবকাঠামো সংস্কার, যন্ত্রপাতি বৃদ্ধি ও জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের দাবিতে তারা এ কর্মসূচি দিয়েছেন। সোমবার থেকে তারা ইউনিটের সব নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। এসময় ইন্টার্ন চিকিৎসক আবরার আল ফয়সাল, ফিরোজ আহমেদ, ফাহমিদা আনোয়ার, সুমাইয়া আহমেদ, মইনুল হোসেন এবং পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী তানজুম জাহানসহ বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মনোজ কুমার বড়ুয়া বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছেন। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।
এদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন আন্দোলনকারীরা। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে।