পুলিনবিহারী সেন : রবীন্দ্রতাপস

| মঙ্গলবার , ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

পুলিনবিহারী সেন (১৯০৮১৯৮৪)। রবীন্দ্র গবেষক। তাকে রবীদ্রতাপসও বলা যায়। তাঁর ধ্যান জ্ঞান ছিলো রবীন্দ্রনাথ। তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে, পরম নিষ্ঠার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রবীন্দ্রচর্চা ও গবেষণায় এক অসামান্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। রবীন্দ্র গবেষণায় তিনি ছিলেন নীরব নিষ্ঠায় উৎসর্গীকৃত একটি জীবন। রবীন্দ্র গবেষণা, সঙ্কলন, সম্পাদনা, মুদ্রণ এবং পুস্তকাকারে প্রকাশে যে উপস্থাপনা, আভিজাত্য ও সৌষ্ঠবের নিদর্শন রেখেছেন তাতে রবীন্দ্র পছন্দের পরিচ্ছন্নতা ও নান্দনিকতা এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ই আগস্ট ওপারবাংলার ময়মনসিংহ জেলার সদর ব্রাহ্মপল্লীতে তাঁর জন্ম। পুলিনদার আদরের নাম রাখা হয় ‘খুদু’। তাঁর পিতা বিপিনবিহারী সেন ছিলেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ও চিকিৎসক। তাঁর মাতা বিজনবামিনী দেবী। শান্তিনিকেতন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ শেষে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল মূলত ‘প্রবাসী’ কার্যালয়ে। প্রবাসীর সম্পাদক রবীন্দ্রসুহৃদ রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে অন্যতম সহকারী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। সেটা ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের কথা।

পরবর্তীসময়ে বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগে নিযুক্ত হন। রবীন্দ্রগ্রন্থপঞ্জী সম্পাদনা করে তিনি বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন। রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র সংকলন ও সম্পাদনাও করেছেন তিনি, দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের বহু গ্রন্থের গ্রন্থপরিচয়। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পুলিনবিহারী বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে যোগ দেন রবীন্দ্র চর্চা প্রকল্পের অধ্যক্ষ হিসেবে। শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্র শতবর্ষে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ। এছাড়া সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক সহ বেশ কিছু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন পুলিনবিহারী সেন। তাঁর সম্পাদিত বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘রবীন্দ্রায়ণ’ [১ম ও ২য় খণ্ড], জগদীশচন্দ্র বসুর ‘অব্যক্ত’, প্রমথ চৌধুরীর ‘সনেট পঞ্চাশৎ ও অন্যান্য কবিতা’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বেশ কিছুকাল তিনি বিশ্বভারতী পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ অক্টোবর তিনি মুৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধশব্দ দূষণের হাত থেকে চট্টগ্রাম শহরকে বাঁচান!