নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত টাকা না নেয়ার জন্য বাসা–বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি আগামী ৬ মাস বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রয়োজনে ধার্যকৃত ফি না নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, সিটি কর্পোরেশন (চসিক) প্রথম পাঁচ–ছয় মাস আপনাদের মাফ করে দেবে। আপনারাও জনগণের উপর কোনো চাপ দেবেন না, জুলুম করবেন না। তিনি গতকাল সোমবার টাইাগারপাস চসিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ডোর টু ডোর’ কার্যক্রম বিষয়ক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। এতে ডোর টু ডোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নতুন নিয়মাবলি ও তার কার্যকর প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ–প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি উপস্থিত ও বাসা–বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহে দায়িত্ব পাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মেয়র ডোর টু ডোর ময়লা সংগ্রহ বিষয়ে নাগরিকদের মতামত সংগ্রহে ২১ অক্টোবর মতবিনিময় সভা আয়োজনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকা থেকে ৫০ জন করে দাওয়াত দিচ্ছি। মুরুব্বিরা আসবেন। পেশাজীবারা আসবেন। তারা তাদের মতামত দেবেন। এই সময় নগরবাসীর অভিযোগ ও পরামর্শ সহজেই গ্রহণের জন্য অনুষ্ঠানে ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ নামে নতুন একটি অ্যাপস–এর উদ্বোধন করা হবে। এ অ্যাপে যে কেউ নালা–নর্দমা, ম্যানহোল ঢাকনা, ডাস্টবিন বা খালের সমস্যাসংক্রান্ত ছবি আপলোড করে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবাকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলতে চাই।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আগে বাসা বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না। অনেকেই ইচ্ছামতো টাকা নিত। এখন বাসা প্রতি সর্বোচ্চ ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কেউ অতিরিক্ত টাকা নিলে সেই প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে। দোকান, শিল্প–কারখানা এবং ভাসমান দোকানের জন্য আলাদা রেট নির্ধারণ করা হয়েছে। ভাসমান দোকান থেকে টাকা আদায় করা যাবে না, কারণ এগুলো অবৈধ।
তিনি বলেন, জনগণের সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ প্রকল্পের বিকল্প নেই। ডোর টু ডোর কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণ ঘরে বসেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সেবা পাবে এবং এটি পুরো নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ডা. শাহাদাত বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে জনগণকে সম্পূর্ণ ফ্রি বা আংশিক ভর্তুকিতে সেবা দেওয়া যায়। সঠিকভাবে ময়লা সংগ্রহ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করাই কর্মীদের মূল দায়িত্ব। কেউ যদি অসহযোগিতা করে, তা আমাকে জানাতে হবে।
এসময় বেসরকাররি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মেয়র বলেন, জনগণ যখন বুঝতে পারবে আপনারা তাদের ময়লাগুলো নিয়মিত নিয়ে যাচ্ছেন, তখন অটোমেটিক তাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মাস শেষে যখন ফি আদায় করার জন্য শিক্ষিত ছেলে পাঠাবেন, যেন বুঝিয়ে বলে। হৈ চৈ না করে।
ডা. শাহাদাত বলেন, হোল্ডিং ট্যাঙ কমানো হয়েছে। জনগণ আজ ঘরে বসে সেবা পাচ্ছে, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমছে এবং এটি শহরের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।