জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে চন্দনাইশে গান পাউডার ছিটিয়ে সদ্য গড়ে তোলা একটি মুদি দোকান ও ওই দোকানের বিশাল একটি গুদাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগুনে পার্শ্ববর্তী একটি ফার্নিচারের দোকান ও একটি বসতবাড়িও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। গত শনিবার গভীর রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বরকল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড কানাইমাদারী নিদাগরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। একদল মুখোশ পরিহিত নাশকতাকারী নৈশ প্রহরীদের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী নৈশ প্রহরী ও ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা।
রাতে দায়িত্বরত নৈশ প্রহরী মো. আবু মনজুর জানান, রাত ২টার দিকে ১৫/১৬ জনের একদল মুখোশ পরিহিত নাশকতাকারী মোটর সাইকেলযোগে এসে প্রথমে তিনিসহ অপর নৈশ প্রহরী মো. নাছিরকে পার্শ্ববর্তী একটি গাছের সাথে বেঁধে ফেলে। এসময় তাদের মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়া হয়। পরে নাশকতাকারীরা গান পাউডার ছিটিয়ে মুদি দোকানসহ বিশাল গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো মুদি দোকান, দোকানের সাথে লাগোয়া বিশাল গোডাউন, তার সাথে লাগোয়া একটি বসতঘর এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটি ফার্নিচারের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আলমগীর ইসলাম (মুদি দোকান ও গোডাউন), আবদুল করিম বাবুল (ফার্নিচার দোকান) এবং উক্ত দোকানের জমিদার মফজল আহমদ (বসতঘর)। এদিকে আগুনের সময় মালামাল সরাতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী ছৈয়দ আহমদের মুদি দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. কামরুল হাছান জানান, রাতে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে কি কারণে আগুন লেগেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কি তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
পুড়ে যাওয়া মুদি দোকান ও গোডাউনের ম্যানেজার এম ফয়েজ উদ্দীন জানান, মাত্র ১৫ দিন আগে জায়গার জমিদার মফজল আহমদের কাছ থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে মুদি দোকান করার জন্য জায়গা ভাড়া নেন একই এলাকার ব্যবসায়ী মো. আলমগীর ইসলাম। ইতিমধ্যে ওই দোকান ও গোডাউনে বিভিন্ন চালান ও ভাউচারের মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি টাকার মালামাল স্টক করেন। কিন্তু জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ গত রাতে গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুরো গোডাউনে রক্ষিত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গোডাউনে থাকা একটি নতুন মোটর সাইকেলও পুড়ে যায়। সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন আলমগীর ইসলাম। ঘটনার সময় রাতে নৈশ প্রহরীরা থাকায় দোকানে কেউ ছিল না।
জমির জমিদার মফজল আহমদ বলেন, জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গত শনিবার রাতে প্রতিপক্ষ নৈশ প্রহরীদের বেঁধে রেখে দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। গত বছরও তারা একই কায়দায় আগুন লাগিয়ে দিয়ে দোকান ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায় এবং ফায়ার সার্ভিসের সমন্বয়ে আগুন নেভাতে সহায়তা করে। এ ঘটনাটি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।